চলতি বছরে ব্যাটারি রিক্সা নিয়ে তোলপাড় বাংলাদেশ। দৈনন্দিন জীবনের এই অপরিহার্য পরিবহণটি কিভাবেই বা আমাদের পরিবহণ ব্যবস্থার অংশ হয়ে গেলো? জার্মানি দাবি করে যে প্রথম অটো-রিকশাটি তাদেরই আবিষ্কার।
যদি কোনো ভিনদেশী বাংলাদেশে আসেন, তাদের চোখে প্রথমেই পড়বে এই তিন চাকার বাহন। রঙিন নকশা আর চমৎকার কারুকার্যযুক্ত এই রিকশাগুলো শুধু যাতায়াতের মাধ্যম নয়, আমাদের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন অটো রিকশা বা ব্যাটারি চালিত রিকশার সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। এই ব্যাটারি চালিত রিকশা অনেক ক্ষেত্রে গতিশীল এবং সহজলভ্য হওয়ার কারণে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।
ব্যাটারি চালিত রিকশার ইতিহাস ও উদ্ভব
আপনি কি কখনো ভেবেছেন, অটো-রিকশার আবিষ্কারক কে? চলুন আজ খুঁজে বের করা যাক এই আইকনিক পরিবহনটি কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল !!
অটো রিকশা বা ব্যাটারি চালিত রিকশা আসলে কি?
অটো-রিকশা বা ব্যাটারি চালিত রিকশা, ইলেকট্রিক রিকশা বা অটো রিকশা নামেও পরিচিত। এটি সাধারণত একটি তিন চাকার ছোট গাড়ি। যার সামনে একজন চালকের আসন থাকেন। এই বাহনে সাধারণত বাইকের মতো ছোট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। ছোট ইঞ্জিনের কারণে এটি গাড়ির তুলনায় অনেক ধীরগতির। তবে, কম খরচ হওয়ায়, এটি ব্যাপক জনপ্রিয়।
প্রাথমিক পর্যায়
রিকশার ইতিহাস শুরু হয় ১৯শ শতাব্দীর শেষের দিকে। তখন জাপানে প্রথমবারের মতো “রিকশা” বা “রিকশো” নামে পরিচিত তিন চাকার যানবাহনের প্রচলন ঘটে। সেসময় এটি মানুষের শক্তি দিয়ে টানা হতো। অর্থাৎ, চালক এটিকে পিছন থেকে টেনে নিয়ে যেত, আর, যাত্রীদের বসার জন্য একটি ছোট কেবিন থাকত।
১৮৬৯ সালে জাপানের ইজুমি ইয়োসুকে নামের এক ব্যক্তি রিকশা আবিষ্কার করেন। তিনি মূলত টোকিওর রাস্তায় ব্যবহৃত ঘোড়ার গাড়ি দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে, এই রিকশার ধারণা পান।
পরবর্তীতে এই ধারণাটি দ্রুত চীন, ভারতসহ অন্যান্য এশীয় দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্যাডেল রিকশা থেকে ধীরে ধীরে সাইকেল রিকশার উদ্ভব হয়। যা চালানো আরও সহজ এবং কার্যকর ছিল।
আর এর পরের ধাপে আসে অটো-রিকশা। যা যাতায়াত ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা করে।
প্রথম অটো-রিকশা কে আবিষ্কার করেছিলেন?
প্রশ্ন হচ্ছে সর্বপ্রথম কে অটোরিকশা আবিষ্কার করেছিল? অটোরিকশার আবিষ্কারক নিয়ে অনেক দেশের আলাদা আলাদা দাবি রয়েছে। যেমন-
জার্মানির দাবি
জার্মানি দাবি করে যে প্রথম অটো-রিকশাটি তাদেরই আবিষ্কার। ১৮৮৬ সালে জার্মান প্রকৌশলী কার্ল বেন্জ, Benz Patent Motor Car তৈরি করেন। যা অটো-রিকশার প্রাথমিক সংস্করণের মতো ছিল। এই যানটি ছিল তিন চাকার এবং এটি ছোট রিয়ার ইঞ্জিন দ্বারা চালিত হতো।
জাপানের দাবি
১৯৩০-এর দশকে, জাপানি কোম্পানি Mazda তাদের Mazda-GO নামক একটি ছোট তিন চাকার যান বাজারে আনে। যা মূলত পণ্য পরিবহনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। একেও অটো-রিকশার একটি প্রাথমিক সংস্করণ ধরা হয়। সেসময় এটি বড় ট্রাকের তুলনায় সস্তা এবং কার্যকর বিকল্প হিসেবে বাজারজাত করা হয়েছিল।
ইতালির দাবি
আধুনিক অটো রিকশার শুরুটা আসলে ইতালিতে। ইতালির বিখ্যাত বিমান প্রকৌশলী কোরাদিনো ডি আসকানিও প্রথম আধুনিক অটোরিকশার নকশা তৈরি করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকটের সময়, সস্তায় পণ্য পরিবহনের জন্য তিনি দুই চাকার মোটরসাইকেল তৈরি করেন। যার নাম দেওয়া হয় Vespa।
পরবর্তীতে সেই Vespa-কে তিন চাকার যানবাহনে রূপান্তর করে নাম রাখেন “Ape”। Ape ছিল সহজ, সাশ্রয়ী এবং কার্যকর একটি যান। তাই, খুব কম সময়ের মধ্যে এটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে ।
ভারতে অটোরিকশার অ্যাডাপটেশন
ভারতের একজন ব্যবসায়ী বাণিজ্যিক ম্যাগাজিনে ইতালির Ape ডিজাইনটি দেখে বেশ মুগ্ধ হন। তিনি এটি ভারতীয় বাজারের উপযোগী করে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৫০-এর দশকে বাজাজ অটো এই নতুন তিন চাকার যান উৎপাদন শুরু করে। এটি আরামদায়ক, শ্রম-সাশ্রয়ী ও কম খরচ হওয়ায় দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
ভারতের এই অটো-রিকশা এতটাই জনপ্রিয় হয় যে, এটি দ্রুত সারা বিশ্বে পরিচিতি পায়। এবং আজকের আধুনিক অটো-রিকশার বিকাশ ঘটে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে বাংলাদেশে ব্যাটারি চালিত রিকশা বা অটোরিকশার উৎপত্তি ঘটল?? এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আমাদের কিছুটা পিছনে যেতে হবে।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ চালিত রিকশার উদ্ভব
ইলেকট্রিক রিকশার জনপ্রিয়তার গল্প
ইলেকট্রিক রিকশার ধারণা মূলত বিদ্যুৎচালিত মোটরের উদ্ভাবনের সাথে সম্পর্কিত। ২০শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ব্যাটারি প্রযুক্তি এবং বৈদ্যুতিক মোটরে বেশ উন্নয়ন ঘটে। যার ফলে পরিবহণে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা শুরু হয়। ১৯৯০-এর দশকে ইলেকট্রিক স্কুটার এবং সাইকেলের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকলে, ব্যাটারি চালিত রিকশার ধারণাও জনপ্রিয় হয়।
চীনে ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে ব্যাটারি চালিত রিকশার ব্যাপক উৎপাদন শুরু হয়। চীনের শিল্প কারখানাগুলো কম খরচে এবং পরিবেশবান্ধব ব্যাটারি চালিত রিকশা তৈরি হতো। পরে তা দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে দেশগুলোতে রপ্তানি করতে থাকে। এসময় সীসা-অ্যাসিড ব্যাটারির ব্যবহার প্রচলিত ছিল। এর ফলে কম খরচে বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করা যেতো।
বাংলাদেশে অটোরিকশার উত্থান এবং জনপ্রিয়তা
বাংলাদেশে অটো রিকশার ব্যবহারের শুরু ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে। ২০০৪ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্ট এর সাথে মিলে যৌথভাবে অটো রিকশার উৎপাদন শুরু করে। তবে, ২০১০-এর পর থেকে এটি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হতে থাকে।
প্যাডেল রিকশার চেয়ে সহজ এবং সময় সাশ্রয়ী হওয়ার ফলে, বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে, বিশেষ করে ঢাকায়, ইলেকট্রিক রিকশা দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়।
অটো রিক্সার প্রযুক্তিগত অগ্রগতি
বাংলাদেশে ইলেকট্রিক রিকশার প্রযুক্তি বিকাশে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ও উন্নতি ঘটতে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল-
লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি
আগে অটো রিকশায় সীসা-অ্যাসিড ব্যাটারির ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে লিথিয়াম আয়রন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। যা সীসা-অ্যাসিড ব্যাটারির তুলনায় অনেক হালকা, দীর্ঘস্থায়ী এবং পরিবেশবান্ধব। এটি যেমন চার্জিং এর সময় কমায়, তেমন দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
ব্রাশলেস মোটর
ব্রাশলেস মোটর ব্যবহারের ফলে অটো রিকশার কার্যক্ষমতা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মোটরগুলো কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এবং ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়াতে সহায়তা করে।
সোলার প্যানেল প্রযুক্তি
কিছু ইলেকট্রিক রিকশাতে সৌরশক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে ব্যাটারির উপর নির্ভরশীলতা কমছে।
অটোরিকশা ও অর্থনীতি
বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে, বিশেষত ঢাকায়, যানজট একটি নিত্যদিনের সমস্যা। এ ব্যস্ত জীবনে অটোরিকশা বা ব্যাটারিচালিত রিকশা একটি আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করে। শুধু যাত্রীদের জন্য নয়, চালকদের জন্যও এটি বেশ সুবিধাজনক।
বাংলাদেশে নিম্ন শ্রেণীর মানুষদের সংখ্যা অধিক হওয়ায় তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। বিশেষত প্যাডেল রিকশা চালানো বা অন্যান্য শ্রমসাধ্য কাজ করতে অনেকেই সক্ষম নন। তাদের জন্য ব্যাটারিচালিত রিকশা একটি কার্যকর আয়ের সুযোগ তৈরি করেছে। বিশেষ করে প্রতিবন্ধী বা বয়স্ক মানুষের জন্য ব্যাটারি চালিত রিকশা চালানো সহজ।
সরকারও অটো রিকশার ব্যবহারকে সহজতর করার জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০১৪ সালে অটো রিকশাকে বৈধতা প্রদান করা হয়। এরপর এর ব্যবহার ও পরিচালনার জন্য বিভিন্ন নিয়মনীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে অটো রিকশার কার্যক্রম আরো নিরাপদ হয়ে উঠছে।
এছাড়া,অটো রিকশার জন্য বিভিন্ন সরকারি সহায়তা যেমন লোনের ব্যবস্থা এবং ভর্তুকি সুবিধা প্রদান করা হয়।যা তাদের জন্য একটি টেকসই এবং লাভজনক কাজের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
অটোরিকশার পরিবেশগত সুবিধা
বাংলাদেশের মতো দেশে পরিবেশ দূষণ, বিশেষত বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণ একটি বড় সমস্যা। তেল বা গ্যাসে চালিত যানবাহনের নির্গত ধোঁয়া এবং যানজটের কারণে বায়ুদূষণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে অটো রিকশা একটি পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে কাজ করে।
অটো রিকশা ইলেকট্রিক পাওয়ার ব্যবহার করায় এতে কোনো ধরনের ক্ষতিকর গ্যাস নির্গত হয় না। এটি শহরের যানজটের মধ্যেও সহজে চলাচল করতে পারে এবং দূষণের মাত্রা কমিয়ে রাখে। বিশেষত ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরের বায়ু ও পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে অটো রিকশা কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
অটোরিকশার চ্যালেঞ্জ
এতক্ষণে আলোচনা থেকে নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে যে অটোরিকশা একটি আশীর্বাদ। কিন্তু আসলে কি তাই? প্রকৃতপক্ষে সকল জিনিসেরই একটি ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক থাকে।
অটোরিকশা ক্ষেত্রে যাত্রী এবং চালককে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। যেমন-
- অটো রিকশার ব্যাটারি সাধারণত একবার চার্জে সীমিত সময় চলে। তাই এটি প্রতিদিন চার্জে দিতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় ভাড়া পাওয়া যায় কিন্তু চার্জ না থাকার কারণে চালক সেখানে যেতে পারে না। আবার পুরনো ব্যাটারি প্রতিস্থাপনের খরচও অনেক বেশি।
- বাংলাদেশের অনেক শহরে অটো রিকশার জন্য কোন নির্দিষ্ট নিয়ম বা বিধিমালা মানা হয় না। যেখানে সেখানে অটো রিকশার ব্যবহারে চালকদের এবং যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
- আমরা সবাই জানি যে, শহরে রাস্তায় ভিড় ও যানজট কতটা বেশি থাকে। তাই চালকদের পক্ষেই রাস্তায় অটো রিক্সা চালানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।
- অনেক সময় পুরনো ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ না করেই। অটো রিক্সাগুলো রাস্তায় নামানো হয়। যার ফলে অটোরিকশাগুলো রাস্তার মাঝখানে নষ্ট হয়ে যানজট তৈরি করে। সাথে যাত্রীরও ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
- অনেক অটোরিকশা চালক সিএনজি বা এলপিজি ব্যবহার না করে পুরনো ইঞ্জিন ব্যবহার করে, যা কার্বন নিঃসরণ বাড়ায়। যার ফলে ব্যাটারি চালিত রিকশার যে মূল ধারণা ছিল যে, এটি পরিবেশ বান্ধব, কিন্তু তা আর থাকেনা।
- অনেক চালক ঋণ নিয়ে অটোরিকশা কিনে থাকেন। তারা শুধু অটোরিকশার ইতিবাচক দিকগুলো বিবেচনা করে ঋণ নিয়ে এটি কিনে ফেলেন। ব্যাটারী চালিত রিকশায় দৈনিক আয় অনিশ্চিত থাকে। বিশেষত যখন যাত্রী কম থাকে বা ট্রাফিকের কারণে কম যাত্রা হয় তখন ভাড়া নেই বললেই চলে।
- অনেক সময় দেখা যায় চালকরা অতিরিক্ত স্পিডে বেখেয়ালভাবে রিকশা চালায়। তারা চালানোর সময় খেয়াল করে না যে কোন কুকুর বা বিড়াল সামনে দিয়ে যাচ্ছে কিনা। এতে অহরহ রাস্তায় তারা দুর্ঘটনার শিকার হয়।
প্যাডেল-রিকশা নাকি AA?
যদি প্যাডেল চালিত রিকশা এবং ব্যাটারি রিকশা পাশাপাশি থাকে তাহলে আপনি কোনটা বেছে নিবেন? মজার ব্যাপার হলো দশ জনের মধ্যে সাতজনই বলবে ব্যাটারি রিকশা।
এদিকে টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে দেখানো হয়, রাজধানীর টিএসসি তে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে প্যাডেল চালিত রিকশা এবং ব্যাটারি রিকশা। তবে যাত্রীদের আগ্রহ যেন ব্যাটারি রিকশাকে ঘিরেই; ডাকাডাকি করেও যাত্রী পেল না প্যাডেল চালিত রিকশাওয়ালা।
তবে সব যাত্রীদের ব্যাটারি চালিত রিক্সায় উঠে তা কিন্তু নয়। অনেক যাত্রী হাতে যদি সময় থাকে তাহলে অনেকে এখনো প্যাডেল রিকশাকে বেছে নেয়।
প্যাডেল রিকশা না ব্যাটারি রিকশা এই নিয়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন যুক্তি।
কেউ বলছেন ব্যাটারি রিকশা সময়ও টাকা দুই দিক থেকেই সাশ্রয়ী। আবার কেউ বলছেন ব্যাটারি রিকশা ঝুঁকিপূর্ণ। অতিরিক্ত গতির ফলে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
প্রতিদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে একজন রিকশা চালকের আয় হয় সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা। সেখানে ব্যাটারি রিকশাচালকেরা অনেক কম পরিশ্রমে আয় করে তার চেয়ে তুলনামূলক বেশি। আবার, ব্যাটারি রিকশায় স্বল্প সময় যাওয়া যায় বেশি দূরত্বে। যে কারণে বেশিরভাগ যাত্রীদের প্রথম পছন্দ ব্যাটারি রিকশা।
যাত্রী চাইলেও সব সময় ব্যাটারি রিকশা পাওয়া যায় না। কারণ বৈধ অনুমতি না থাকায় এর সংখ্যা তুলনামূলক কম। তবুও বর্তমান ট্রাফিক ব্যবস্থার ফাঁকফোকরে রাস্তায় ব্যাটারি রিকশার সংখ্যা বেড়েছে।
প্যাডেল রিকশাচালকদের মতে, ব্যাটারি রিকশার কারণে তাদের আয় কমে গেছে। কম শ্রমে বেশি আয় হওয়ার সুযোগ থাকায় অনেক প্যাডেল রিকশাচালকই ব্যাটারিতে আসতে আগ্রহী। তবে এ ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হলো অনুমতির অভাব। যদি তারা বৈধ অনুমতি পেতেন, তবে প্যাডেল রিকশা ছেড়ে ব্যাটারি রিকশা চালানো তাদের জন্য সহজ ও আর্থিকভাবে লাভজনক হতো।
ব্যাটারি চালিত রিকশা যেন একটা নতুন সময়ের সূচনা। এটা আমাদের দেখায়, কীভাবে প্রযুক্তি আর মানুষের প্রয়োজন একটা বড় পরিবর্তন আনতে পারে। আবার আমাদের পথে পথে বয়ে যাওয়া গল্পের স্রোতের বাহক এই অটোরিকশা; এযেন আমাদের জীবনের হারিয়ে যাওয়া গল্পের নতুন সংস্করণ।
সূত্র
- https://www.mapsofindia.com/my-india/history/know-the-history-of-the-auto-rickshaw
- https://minghongmotors.com/who-invented-the-auto-rickshaw/
- https://www.facebook.com/rtvonline/videos/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF-%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%B6%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B9-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0/1121585002895331/