Image default
রহস্য রোমাঞ্চ

আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের পূর্বসূরী আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাশাস্ত্র

রোগ প্রতিকার নয়, প্রতিরোধই বেশি মনোযোগ ছিল আয়ুর্বেদ চিকিৎসাশাস্ত্রের

আয়ুর্বেদ কথার অর্থ হল বিদ্ ধাতুর অর্থ জ্ঞান বা জানা। অর্থাৎ, যে বিদ্যার দ্বারা আমরা সুস্বাস্থ্য বা সুন্দর জীবন সম্পর্কে সুষ্ঠুভাবে জ্ঞান অর্জন করতে পারি তাই হল আয়ুর্বেদ শাস্ত্র। আয়ুর্বেদ মনে করে মানুষের জীবন– দেহ, অনুভুতি ও আত্নার একটা সমন্বয়। মানুষের শরীরের ধাতুগুলো — রস, রক্ত, মাংস, অস্থি, মজ্জা, মেদ ও শুক্র নানা কারনে ভারসাম্যহীনতায় পড়তে পারে। তাই ভেষজ ঔষধ, নানাবিধ খাদ্য ও জীবন যাপনের অভ্যাস পরিবর্তনের(যোগ ব্যায়াম, ধ্যান) ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা পেতে পারি সুস্থ ও সাফল্যমন্ডিত দীর্ঘ জীবন।

প্রাচীন ভারতের অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল আয়ুর্বেদ। সেই সুত্রে বলা বাহুল্য, প্রাচীন বাংলাতেও আয়ুর্বেদই ছিল চিকিৎসার মূল ধারা। আয়ুর্বেদ মুলত একটি ধর্মগ্রন্থই। বেদ শাস্ত্রেরই একটি শাখা এটি। আয়ু বৃদ্ধির বেদ। হিন্দু পুরানে দেবতাদের চিকিৎসক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘ধনন্তরীকে’। তাকেই বিবেচনা করা হত আয়ুর্বেদের জনক হিসেবে। ভারত বর্ষের আয়ুর্বেদ চিকিৎসার ইতিহাস দু’হাজারের বছরেরেও অধিক। কথিত আছে আয়ুর্বেদের মূল নীতিগুলো পদ্ধতি আকারে সংরক্ষন করেছিলেন ‘কনিষ্ক’ রাজার চিকিৎসক ‘চরক’। যা ‘চরক সংহিতা’ নামে বিখ্যাত।

আয়ুর্বেদের মূলনীতি ‘চরক সংহিতা’

আয়ুর্বেদ, ভারতের প্রাচীন চিকিৎসা বিজ্ঞান। এটি শুধু একটি চিকিৎসা পদ্ধতি নয়, বরং জীবনযাপনের একটি সামগ্রিক দর্শন। হাজার বছরের ঐতিহ্য নিয়ে এই বিজ্ঞান শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। গুপ্ত সাম্রাজ্যের স্বর্ণযুগে (৩২০-৫৫০ খ্রিস্টাব্দ) আয়ুর্বেদ তার চিকিৎসা পদ্ধতির শীর্ষে পৌঁছায়, যখন উন্নত শল্যচিকিৎসা, ভেষজ প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্যবিধি তৎকালীন বিশ্বে ছিল অতুলনীয়। বর্তমান আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির পূর্বসূরী হিসেবেও বিবেচনা করা যায় প্রাচীন ভারতের আয়র্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতিকে। আধুনিক যুগে যোগ, ধ্যান ও ভেষজ চিকিৎসার জনপ্রিয়তা আয়ুর্বেদের চিরন্তন প্রাসঙ্গিকতার প্রমাণই হাজির করে।

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রের বিভিন্ন ধারা

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রেও আধুনিক সময়ের চিকিৎসা পদ্ধতির মতো আলাদা আলাদভাগে চিকিৎসা দেওয়া হতো। সেসময়ে আলাদা আলাদা ভাগের জন্য ছিলো আলাদা আলাদা শাস্ত্রী। আয়ুর্বেদের প্রধান ৮টি অঙ্গ হল — শল্যতন্ত্র (Major Surgery), শালাক্য তন্ত্র (Minor Surgery), কায়চিকিৎসা (Therapeutics), ভূতবিদ্যা (Demonology), কুমারভৃত্য (Paediatric), অগদতন্ত্র (Toxicology), রসায়ন (Elixin), বাজীকরণ (Aphrodisiacs)। 

আলোচ্য শাখাগুলিতে পারদর্শী প্রাচীন চিকিৎসকগণ নিজ অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের দ্বারাই রোগ নির্ণয়, রোগ নিরাময় ইত্যাদি দক্ষতার সাথে করতেন। তবে দুঃখের বিষয় এই যে, সেই সমস্ত প্রাচীন আচার্যগণের নিজস্ব রচনাগুলি এখন বিলুপ্ত প্রায়। শুধুমাত্র গ্রন্থের নাম সমূহ পুরাণ এর মতো গ্রন্থে উল্লিখিত আছে। তার মধ্যে ধন্বন্তরির চিকিৎসা তত্ত্ববিজ্ঞান, নকুল প্রণীত বৈদ্যকসর্বস্ব, কাশীরাজের চিকিৎসা কৌমুদী উল্লেখ্য। 

পরবর্তীকালে এই সমস্ত প্রাচীন আচার্যদের ধ্যান ধারণা, সিদ্ধান্ত ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করা হয়। এই ধরনের সংকলন গ্রন্থগুলিতে সেই সমস্ত মূল্যবান মতামত সংরক্ষিত আছে। তার মধ্যে চরকসংহিতা ও সুশ্রুত সংহিতা উল্লেখযোগ্য। চরক কর্তৃক সংকলিত এই গ্রন্থ আনুমানিক খ্রিঃ ১ম শতকে এবং সুশ্রুত কর্তৃক সংকলিত সুশ্ৰুত সংহিতা আনুমানিক খ্রিঃ ৫ম অথবা ৬ষ্ঠ শতকে রচিত হয়। 

আয়ুর্বেদের ব্যবহার ও চিকিৎসা পদ্ধতি : আধুনিক প্লাস্টিক সার্জারির পূর্বসূরী

গুপ্ত সাম্রাজ্যে স্বাস্থ্যসেবার মূল ভিত্তি ছিল আয়ুর্বেদ। চরক সংহিতা এবং সুশ্রুত সংহিতার মতো গ্রন্থগুলো এই সময়ে পরিশীলিত হয়ে ওঠে। চরক সংহিতায় রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা, এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার বিস্তারিত বিবরণ ছিল। অপরদিকে সুশ্রুত সংহিতা শল্যচিকিৎসার কৌশলের উপর জোর দিয়েছিল। বৈদ্যরা হলুদ, তুলসী, আমলকী, এবং অশ্বগন্ধার মতো ভেষজ উদ্ভিদ ব্যবহার করে ওষুধ তৈরি করতেন। যেমন, হলুদের অ্যান্টিসেপটিক গুণ ক্ষত চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো।

প্রাচীন মুনি-ঋষি ভেষজ ঔষধ তৈরি করছে

শল্যচিকিৎসায় গুপ্ত যুগের চিকিৎসকরা ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ। সুশ্রুতের বর্ণনা অনুযায়ী, তারা নাকের পুনর্গঠন (রাইনোপ্লাস্টি), ছানি অপারেশন, এবং হাড়ের সার্জারি করতে পারতেন। এই কৌশলগুলো আধুনিক শল্যচিকিৎসার সঙ্গে তুলনীয়। নাকের পুনর্গঠনে গালের চামড়া ব্যবহার করা হতো, যা আধুনিক প্লাস্টিক সার্জারির পূর্বসূরী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

প্রাচীন ভারতের স্বাস্থ্য প্রযুক্তিতে আয়ুর্বেদের ভূমিকা

আয়ুর্বেদ শুধু চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল না, বরং একটি সামগ্রিক জীবনবিজ্ঞান ছিল। এটি বাত, পিত্ত, এবং কফ দোষের ভারসাম্যের উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগতকৃত চিকিৎসা প্রদান করতো। গুপ্ত যুগে এই তত্ত্ব ব্যবহার করে রোগীর প্রকৃতি অনুযায়ী চিকিৎসা নির্ধারণ করা হতো, যা আধুনিক ব্যক্তিগতকৃত ওষুধের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ মনে করে ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোম এই পঞ্চভূতের সাথে মন বা চেতনার সাম্য হল সুস্বাস্থ্য আবার এই দু’এর বৈষম্যই হল ব্যাধি। এছাড়া রোগের অপর প্রধান কারণ হিসাবে আয়ুর্বেদে বলা হয়েছে যে মানবশরীরে বায়ু, পিত্ত ও কফ বা শ্লেষা রয়েছে, এই তিন এর বৈষম্যই মূলত ব্যধির কারণ। আর এই তিনের সাম্যেই সুস্বাস্থ্য। শরীরে যদি বায়ু, পিত্ত ও কফের সুসামঞ্জস্য বজায় থাকে তাহলে বহিরাগত জীবানুর আক্রমণকে প্রাচীন চিকিৎসকগণ রোগের মূল কারণ বলে মনে করেন না। অতএব এই বায়ু পিত্ত ও কফের সুসানকে সামঞ্জস্য করতে হবে।এর জন্য অসাত্ম্য  (প্রকৃতি বিরুদ্ধ পদার্থ) বিষয় ভোগ থেকে বিরত থাকা উচিত। অর্থাৎ সমস্ত রোগের মূল কারণ এই অসাত্ম্য বিষয়ভোগ। ভারতীয় প্রাচীন ধর্মশাস্ত্ৰ সমূহে এবং আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়েছে, খাদ্যাখাদ্য রীতির উপর মানবদেহের স্বাস্থ্য ও অস্বাস্থ্য নির্ভর করে থাকে।

ভেষজ ওষুধ পিষিয়ে তৈরি করা হচ্ছে

এMও গুপ্ত আমল

গুপ্তরা রসশাস্ত্রে পারদর্শী ছিলেন। তারা পারদ, স্বর্ণ, এবং রৌপ্যের মতো ধাতু ব্যবহার করে ওষুধ তৈরি করতেন। এই প্রক্রিয়া আধুনিক ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পের সঙ্গে তুলনীয়, যদিও নিরাপত্তার বিষয়ে আধুনিক মানদণ্ডের তুলনায় এটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।

রসশাস্ত্রে পারদ, স্বর্ণ, রৌপ্য, তামা, লোহা, সীসা, গন্ধক ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ শোধন করে ভস্মে (ক্যালসিনেটেড পাউডার) পরিণত করা হতো। তারপর ভেষজ উপাদান মিশ্রিত করে সংমিশ্রিত ওষুধ তৈরি করা হতো। এই প্রক্রিয়ায় জটিল রাসায়নিক পদ্ধতি, যেমন শুদ্ধিকরণ (শোধন), মারণ (ক্যালসিনেশন) এবং সংস্কার (প্রক্রিয়াকরণ), ব্যবহার করা হতো। 

উদাহরণস্বরূপ, পারদের বিষাক্ততা মুক্ত করতে একাধিক ধাপে শোধন করা হতো, যেমন ভেষজ রসে ভিজিয়ে রাখা বা তাপ প্রয়োগ। স্বর্ণ ভস্ম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং দীর্ঘায়ু বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হতো। মকরধ্বজ, পারদ ও স্বর্ণের সংমিশ্রণে তৈরি একটি ওষুধ, শক্তি বৃদ্ধি ও ক্রনিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো।

গুপ্ত আমলের স্বাস্থ্যবিধি ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা

গুপ্ত আমলে স্বাস্থ্যবিধি আয়ুর্বেদের একটি মূল স্তম্ভ ছিল, যা রোগ প্রতিরোধের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিল। চরক সংহিতায় উল্লেখ আছে, “অপথ্য খাদ্য রোগের মূল কারণ”, যা খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার সঙ্গে স্বাস্থ্যের সম্পর্ককে তুলে ধরে। শাস্ত্রীরা ব্যক্তির প্রকৃতি (দোষ ভারসাম্য) অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস নির্ধারণ করতেন। সেই সময়েও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা স্বাস্থ্যবিধির অন্যতম অংশ ছিল। গুপ্ত নগরগুলোতে, যেমন পাটলিপুত্রে পানি সরবরাহ ও পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা উন্নত ছিল। চীনা পর্যটক ফা-হিয়েন (৫ম শতাব্দী) তার বিবরণে উল্লেখ করেছেন যে, পাটলিপুত্রে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল। এই পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা সংক্রমণ রোধে সহায়ক ছিল, যা আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থার মতোই ছিলো। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধিতে দৈনিক স্নান, দাঁত পরিষ্কার এবং ত্বকের যত্নের উপর জোর দেওয়া হতো।

প্রাচীন আয়ুর্বেদে দিনচর্যা (দৈনিক রুটিন) এবং ঋতুচর্যা (ঋতুভিত্তিক জীবনযাত্রা) কথা উল্লেখ ছিল, যা শরীরের প্রাকৃতিক ছন্দের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রোগ প্রতিরোধ করতো। এই ব্যবস্থা আধুনিক প্রতিরোধমূলক চিকিৎসার সঙ্গে তুলনীয়, যা জনস্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনের উপর নির্ভর করে তৈরি।

প্রাকৃতিক চিকিৎসা গুপ্ত আমলে আয়ুর্বেদের আরেকটি অনন্য দিক ছিল, যা শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য প্রকৃতি-নির্ভর পদ্ধতির উপর জোর দিয়েছিল। যোগ, ধ্যান এবং প্রাণায়াম মানসিক শান্তি ও শারীরিক সুস্থতার জন্য ব্যবহৃত হতো। চরক সংহিতায় মানসিক স্বাস্থ্যকে শারীরিক স্বাস্থ্যের সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। 

ধ্যান ও প্রাণায়াম মানসিক চাপ কমাতে এবং ঘুমের মান উন্নত করতে সহায়ক ছিল, যা আধুনিক মাইন্ডফুলনেস এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের পূর্বসূরী। পঞ্চকর্ম, আয়ুর্বেদের একটি বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণের জন্য ব্যবহৃত হতো। এই পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে বমন (বমি), বিরেচন (পরিষ্কারণ), বস্তি (এনিমা), নাস্য (নাকের চিকিৎসা) এবং রক্তমোক্ষণ (রক্ত পরিশোধন)। পঞ্চকর্ম শরীরের দোষ ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতো এবং ক্রনিক রোগের চিকিৎসায় কার্যকর ছিল। 

যোগ ব্যায়াম

উদাহরণস্বরূপ, বস্তি পদ্ধতি বাতজনিত সমস্যা ও পাচনতন্ত্রের সমস্যা নিরাময়ে ব্যবহৃত হতো। অভ্যঙ্গ বা তেল ম্যাসাজ শারীরিক ও মানসিক শান্তির জন্য জনপ্রিয় ছিল। তিলের তেল বা ভেষজ তেল ব্যবহার করে ম্যাসাজ পেশি শিথিলকরণ, রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি এবং ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক ছিল। এই পদ্ধতি আধুনিক ফিজিওথেরাপি ও ম্যাসাজ থেরাপির সঙ্গে তুলনীয়।

গুপ্ত আমলে প্রাকৃতিক চিকিৎসায় ভেষজ উপাদানের ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য ছিল। যেমন তুলসী পাতা জ্বর ও শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতো। এই ভেষজ চিকিৎসা প্রাকৃতিক উপাদানের উপর নির্ভর করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম রাখতো, যা আধুনিক ফাইটোথেরাপির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। গুপ্ত সমাজে প্রাকৃতিক চিকিৎসা শুধু শারীরিক রোগ নিরাময়ে নয়, মানসিক স্থিতিশীলতা ও আধ্যাত্মিক উন্নতিতেও সহায়ক ছিল। আয়ুর্বেদের এই সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গুপ্ত আমলের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে অনন্য করে তুলেছিল।

গুপ্ত আমলে স্বাস্থ্যবিধি ও প্রাকৃতিক চিকিৎসার সাফল্যের পেছনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও সুসংগঠিত সামাজিক ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সম্রাটরা আরোগ্যশালা ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় অর্থায়ন করতেন, যেখানে দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হতো। মোট কথা গুপ্ত সম্রাটদের হেলথ সিস্টেমে আয়ুর্বেদের অবদান ছিলো একেবারে চোখে পড়ার মতো।

ঔষধি গুণসম্পন্ন বিভিন্ন ভেষজ গাছ

গুপ্ত আমলে (৩২০-৫৫০ খ্রিস্টাব্দ) আয়ুর্বেদ তার শীর্ষে পৌঁছে শল্যচিকিৎসা, ভেষজ, রসশাস্ত্র, স্বাস্থ্যবিধি ও প্রাকৃতিক চিকিৎসার সমন্বয়ে একটি সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। এর দোষ ভারসাম্য, যোগ, ধ্যান ও পঞ্চকর্মের মতো পদ্ধতি শরীর-মনের সুস্থতা নিশ্চিত করেছে। আধুনিক ফার্মাসিউটিক্যাল, স্যানিটেশন ও মাইন্ডফুলনেসের পূর্বসূরী এই বিজ্ঞান আজও ক্রনিক রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় প্রাসঙ্গিক। যোগ ও ভেষজের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা আয়ুর্বেদের চিরন্তন প্রভাব প্রমাণ করে।

তথ্যসূত্র

Related posts

বদ নজর কী- সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানে বদনজর থেকে মুক্তির উপায়!

আশা রহমান

রাশিচক্র কি ছদ্মবিজ্ঞান নাকি ভবিষ্যৎ জানার মাধ্যম?

খুনেই আনন্দ!-জোডিয়াক কিলার

Leave a Comment

Table of Contents

    This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More