Image default
রহস্য রোমাঞ্চ

দাশত-ই লুত: পৃথিবীর উষ্ণতম মরুভূমি

দাশ্ত ই লুত মরুভূমির একটি অংশে কয়েকটি গম রেখে দিলে সূর্যের তাপে সেটিও পুড়ে টোস্ট হয়ে যায়। এই স্থানটিকে বলা হয় ‘গন্দম বেরিয়ান’, যার ইংরেজি অর্থ ‘টোস্টেড হুইট’ এবং বাংলায় বলা হয় গমের টোস্ট।

লুত মরুভূমি (দাশত-ই-লুত) ইরানের কের্মান, সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম শুষ্ক ও উষ্ণতম স্থান হিসেবে পরিচিত। এই মরুভূমিটি শুধু শুষ্কতা বা উষ্ণতার জন্যই বিখ্যাত এমন নয়, বরং, এর বিস্তৃত বালুকারাশির পাশাপাশি বিভিন্ন লবণের সমভূমি (কাভির) এবং অনন্য ভূতাত্ত্বিক গঠনসমূহের জন্যও পরিচিত।  

ফারসি শব্দ ‘লুত’ যার অর্থ গাছপালা বিহীন খালি জায়গা এবং দাশ্ত অর্থ সমতল। প্রাণের অস্তিত বিহীন ও অনুর্বর জমির কারণে ইরানিরা এই স্থানটির নামকরণ করে দাশ্ত-ই-লুত বা লুত মরুভূমি। 

দেশ ইরান
অঞ্চল/ রাজ্য কের্মন এবং সিস্তান ও বালুচেস্তান
আয়তন ৫১,৮০০ বর্গকিলোমিটার
সরকারি ভাষা ফার্সি
প্রধান মুদ্রা রিয়াল
দাশত-ই লুত

দাশত-ই লুত এর আয়তন, অবস্থান ও জলবায়ু

অধিক তাপমাত্রা ও কম পরিমাণে বৃষ্টি; সব মিলিয়ে মরুভূমিগুলো উষ্ণতার এক অনন্য উদাহরণ। এ তালিকায় ইরানের লুত মরুভূমির নাম উল্লেখযোগ্য। 

এই মরুভূমির ৭০ শতাংশ ইরানের কের্মন প্রদেশ ও ৩০ শতাংশ বেলুচিস্তান ও সিস্তান প্রদেশে রয়েছে। মরুর পূর্ব অংশ লবণাক্ত নিম্ন মালভূমি অবস্থিত।  

এই বিশালাকার লবণ মরুভূমিটির আয়তন ৫১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার। লুত মরুভূমি প্রায় ২০০ মাইল এলাকা বিশ্বের সবচেয়ে শুষ্ক ও উষ্ণ স্থান হিসেবে পরিচিত। 

বছরের শুধু জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই শুষ্ক অঞ্চলটিতে প্রচণ্ড বাতাস প্রবাহিত হয়। নাসা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, পৃথিবীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার স্থান হিসাবে, ইরানের লুত মরুভূমি বিশ্বের অন্যতম উষ্ণ স্থান। ২০০৫ সালে লুত মরুভূমিতে ৭০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়।

দাশত-ই লুত এর জীব বৈচিত্র্য

দাশত-ই লুত এ এক অদ্ভুত বাস্তুসংস্থান তৈরি হয়েছে যা পৃথিবীর আর কোথাও দেখা সম্ভব নয়। এখানে কিছু প্রাণী ও উদ্ভিদের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যারা কিনা এই মরুভূমির অতি উষ্ণ পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে—পার্সিয়ান অনাগার (এক প্রকার বন্য গাধা), বালুকা শিয়াল, বালির বিড়াল এবং বিভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ ও সাপ। 

এখানে অনেক অতিথি পাখি যেমন—এক প্রজাতির বুলবুল পাখিরও দেখা মেলে। গিরিখাতে এমন কিছু গাছ বেড়ে উঠেছে যা অতিথি পাখিদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য মনোরোম স্থান। কিন্তু এদের সাপের কামড়ে অথবা লবনাক্ত পানি পান করার ফলে মৃত্যু ঘটে। তখনি এই পাখির মৃতদেহ পতঙ্গ, সাপ ও মরুর শিয়ালদের বাড়তি খাবার হিসেবে কাজ করে। 

এই মরুভূমিতে বেশ কিছু স্থানে ঝোপ-ঝাড় দেখা পাওয়া যাবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো স্যাস্কোল গাছ যা মরুভূমির তিব্র উষ্ণ পরিবেশে টিকে থাকতে পারে। এই মরুভূমিতে এখন পর্যন্ত মোট ৫৮ টি প্রজাতির গাছের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও মরুভূমিটিতে নেবকা নামক ১০ মিটার উচ্চতার বালির টিলা রয়েছে। এই টিলাগুলোর উপরে তেঁতুল গাছ ও অন্যান্য গুল্ম জন্মাতে দেখা যায়। এজন্য নেবকাকে বলা হয় লুত মরুভূমির ফুলদানি। 

লুত মরুভূমির প্রাণী

দাশত-ই লুত এর ইতিহাস

মানববসতির আগে লুত মরুভূমি ছিল ‘তিস’ নামক একটি বিশেষ সমুদ্রের আবাসস্থল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ধীরে ধীরে এই সমুদ্র শুকিয়ে যায় এবং লবণাক্ত অনুর্বর জমিতে পরিণত হয়।

আনুমানিক, ২৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, এই এলাকায় একটি সমৃদ্ধ সভ্যতা বিদ্যমান ছিল। প্রাচীন কালে মরুভূমিটির পশ্চিম প্রান্তে ছিলো শাহদাদ, আর পূর্ব দিকে ছিল শাহর-ই-সোখতা নামের দু’টি বিশাল প্রাচীন শহর।

শাহদাদ শহর হলো ব্রোঞ্জ যুগে গড়ে ওঠা একটি শহর! ১৯৬৮ সালে আলী হাকেমি এই শহরটি আবিষ্কার করেন। তিনি সাত বছর ধরে এই স্থানে খনন কার্য পরিচালনা করেন। শহরের পাশাপাশি তিনি ব্রোঞ্জ যুগের অসংখ্য পাথর ও ধাতব বস্তুও উদ্ধার করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, কুঠার, সিলমোহর, পাত্র ও অলঙ্কার। 

লুত এলাকা ইরানি প্রত্নতত্ত্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। সম্প্রতি, কের্মন রেঞ্জের পূর্ব দিকে এবং লুত মরুভূমির পশ্চিম প্রান্তের কাছাকাছি একটি বিস্তৃত প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ করা হয়েছিল। ফলস্বরূপ, সেখানে খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম সহস্রাব্দ থেকে শেষের ইসলামি যুগ পর্যন্ত ৮৭টি প্রাচীন স্থান চিহ্নিত করা হয়েছিল। এই স্থানগুলির মধ্যে তেইশটি তাম্র এবং ব্রোঞ্জ যুগের বলে জানা যায়।

সবচেয়ে উষ্ণ স্থান গন্দম ব্যারিয়ান 

লুত মরুভূমির সবচেয়ে উষ্ণ স্থান হলো গন্দম ব্যারিয়ান। এটি অন্ধকার লাভায় আচ্ছাদিত একটি বড় মালভূমি, যা প্রায় ৪৮০ বর্গকিলমিটার জুড়ে বিসতীর্ণ। ফার্সি ভাষায় গন্দম বেরিয়ান অর্থ পোড়া গম।  

এটি ইরানের লুত মরুভূমিতে অবস্থিত একটি বিখ্যাত অঞ্চল, যা অত্যন্ত উষ্ণ এবং পাথুরে দৃশ্যের জন্য পরিচিত। ধারণা করা হয়, এই নামটি এসেছে সেখানকার পাথুরে এলাকা সূর্যের প্রচণ্ড তাপে পুড়ে যাওয়ার ফলে গম পোড়ার মতো দেখানোর কারণে। 

এই নাম নিয়ে একটি আঞ্চলিক কাহিনী প্রচলিত আছে। বহুদিন আগে একবার গম ব্যবসায়ীদের এক কাফেলা পথ ভুলে এই স্থানে ঢুকে পরেছিল। তারা কিছু গমের বোঝা এখানে রেখে গিয়েছিল। কিছুদিন পর যখন তারা উট নিয়ে আসে গমের বোঝা নেওয়ার জন্য তখন দেখতে পায় এখানকার বীভৎস তাপে বিনা আগুনে সেগুলো পুড়ে কালো হয়ে গিয়েছিল। সেই থেকে এই জায়গাটির নাম হয়ে গেছে গন্দম বেরিয়ান। 

কেন দাশত-ই লুত পৃথিবীর উষ্ণতম মরুভূমি?

২০১৬ সালের ১৭ জুলাই ইউনেস্কো লুত মরুভূমিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই মরুভূমির আগে বিশ্বে সর্বাধিক শুষ্ক ও উষ্ণ স্থানের রেকর্ডটি ছিল ক্যালিফর্নিয়ার ডেথ ভ্যালির দখলে। 

আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই মরুভূমি এতটাই উষ্ণ যে, কেউ যদি সাথে ফোন, থার্মোমিটার অথবা অন্য কোনো ডিভাইস নিয়ে যায়, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এমনকি প্রচণ্ড উত্তাপের কারণে ডিসপ্লে ও ফেটে যেতে পারে। আবার, বালির উত্তাপের কারণে পথচারীদের জুতার নীচের অংশ গলে যাওয়াও অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। 

এক গবেষণায় দেখা গেছে, মরুভূমির অর্ধেকেরও বেশি ভূপৃষ্ঠ আগ্নেয় শিলা দ্বারা আবৃত। যেগুলিতে গরমের সময় বাষ্পীভবন লক্ষ্য করা যায়। লুত মরুভূমি বিশ্বের সবচেয়ে উত্তপ্ত জায়গা হিসেবে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। ২০০২ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যবর্তী সময়ে এই এলাকার তাপমাত্রা বীভৎস হয়ে উঠেছিল।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রায় ২০০ মাইল জুড়ে বিস্তৃত লুত মরুভূমি পাহাড়ে ঘেরা থাকায় সেখানে গরম বাতাসকে আটকে থাকে, ফলে বাতাসের তাপমাত্রা চরম অবস্থায় উঠে যায়। সেখানে একবার দাঁড়ালে যে কারো শরীরে ফোস্কা পড়ে যাবে। এ অঞ্চলে জীবনধারণের জন্য এত বিরূপ পরিস্থিতি রয়েছে যে, এখানে কেউ বসবাস করতে পারে না। এমনকি ব্যাকটেরিয়াও এ অঞ্চলে বাস করতে পারে না। তবে, এখানে বিভিন্ন প্রাণীর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। অবাক করা বিষয় হলো, এখানে ডাইনোসরের নখের পাশাপাশি উল্কাপিন্ডও আবিষ্কৃত হয়েছে এখানে। 

দাশত ই লুত মরুভূমিতে পাওয়া বিভিন্ন প্রাণীর জীবাশ্ম

দাশত-ই লুত এর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য

এই মরুভূমির সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে, যেখানে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে যাযাবর গোষ্ঠীগুলি বসবাস করেছে। এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মরুভূমিটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে, যা শুধুমাত্র দৃশ্যত মনোরম গন্তব্য নয়, বরং একটি শিক্ষামূলক স্থানও বটে। দর্শনার্থীরা এখানে যাযাবর গোষ্ঠীর ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারেন এবং পৃথিবীর অন্যতম কঠোর পরিবেশে জীবনের বাস্তবতা সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি অর্জন করতে পারবেন। 

লুত মরুভূমির আকর্ষণীয় স্থান 

এই মরুভূমিতে দর্শনার্থীরা প্রকৃতির সৌন্দর্যকে তার নিখাদ রূপে অনুভব করার সুযোগ পাবেন। এখানকার বিস্তীর্ণ খোলা প্রান্তর ও বালিয়াড়ির পরিবর্তনশীল রঙ শ্বাসরুদ্ধকর এক দৃশ্য তৈরি করে। এই দৃশ্য নিঃসন্দেহে পৃথিবীর অন্য যে কোনো মরুভুমির তুলনায় একেবারে ভিন্ন।

কালুত উপত্যকা – ভিনগ্রহের শহর!

এই মরুভূমিতে পাওয়া যায় একটি বিশেষ ভূতাত্ত্বিক গঠন যা কালুত নামে পরিচিত। এটি হাজার হাজার বছরের বায়ু ক্ষয়ের ফলে গঠিত বিশাল আকৃতির ভাস্কর্যযুক্ত কাঠামো যা দেখতে কিছুটা পিরামিডের মতো। কালুতের উচ্চতা কয়েক ফুট থেকে শুরু করে শত শত ফুট পর্যন্ত হতে পারে। 

কালুত উপত্যকা

ধারাবাহিকভাবে বালি উড়ে আসায় এই কাঠামোগুলো মসৃণ হয়ে থাকে। সূর্যের আলো যখন এই কালুতের গায়ে পড়ে, তখন মনে হয় কেউ যেন পুরো মরুভূমিটাকে আগুন দিয়ে সাজিয়ে রেখেছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এখানকার গঠনশৈলী এতটাই ভৌতিক যে, অনেকে একে বলে “দ্য ঘোস্ট সিটি”! রাতে এই কালুতগুলোতে বাতাসের প্রবল শব্দ এক ভৌতিক পরিবেশ তৈরি করে। 

গ্যাবির প্লেইন – লবণের জাদুকরি ক্যানভাস!

দাশত-ই-লুতের গ্যাবির প্লেইন একটি বিশাল এক লবণের সমুদ্র। এখানে বালির মাঝে লবণের সাদা সাদা স্তর এমনভাবে ছড়িয়ে আছে, যেন কেউ পুরো মরুভূমিকে লবণের পাউডারে মুড়িয়ে রেখেছে! 

লবণ জলাশয়

বৃষ্টির পর এই অঞ্চলটাতে ছোট ছোট জলাশয় তৈরি হয়, যা একধরনের আয়নার মতো কাজ করে। ফলে আকাশের রঙ আর মরুভূমির রঙ মিলেমিশে এক হয়ে যায়। এসময় এখানকার লবণের জলাশয়গুলো দেখতে মনে হয়, যেন কেউ বিশাল ক্যানভাসে ছবি আঁকিয়ে রেখেছে। 

ইয়ারডাং 

এখানে আরও রয়েছে, ইয়ারডাং নামে পরিচিত ১০ তলা ভবনের সমান উঁচু বালির দুর্গ। সূর্যদয়ের সময় এই কাঠামোগুলো এতটা চিত্রাকর্ষক হয় যে, এই গুলো যে কারোর নজর কাড়তে বাধ্য। 

লুত মরুভূমিতে পর্যটক

লুত মরুভূমিতে কী ভ্রমণ নিরাপদ?

দুই দশক ধরে উচ্চ রেজ্যুলেশনের স্যাটেলাইট তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, লুত মরুভূমির তাপমাত্রা মাঝে মধ্যে ৮০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়, যা চরম বিপজ্জনকমাত্রা। যেখানে ভ্রমণ করার ইচ্ছা কল্পনাতেও আনা ঠিক নয়। কিন্তু এখানে রাতে তাপমাত্রা কিছুটা কম তাই ক্যাম্প করে আকাশের নীচে রাত কাটানো যায়। এসময় রাতে দেখা যায় তারা ভরা আকাশ। 

তবে দর্শনার্থীদের পরামর্শ দেওয়া হয় যে, কেরমান প্রদেশে অবস্থিত লুত মরুভূমিতে গ্রীষ্মকালে ঘুরতে যাওয়া উচিত নয়, কারণ তখন তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে বেশি হতে পারে। অন্যদিকে, শীত ও বসন্তকালে রাতের তাপমাত্রা শূন্যের নিচে নেমে যেতে পারে, তাই সেসময় উপযুক্ত প্রস্তুতি নেওয়াই ভালো। 

ভ্রমণের জন্য সর্বোত্তম সময় হলো অক্টোবরের শেষ থেকে জুনের শুরু পর্যন্ত। এই সময়ে তাপমাত্রা সাধারণত সহনীয় থাকে । ভ্রমণপ্রেমী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এটি অবশ্যই দেখার মতো একটি গন্তব্য। 

লুত মরুভূমির ভ্রমণ নিয়ে আরও কিছু তথ্য

এই স্থানে বিমান বা সড়ক পথে পৌঁছানো সম্ভব। 

নিকটতম বিমানবন্দর হলো কেরমান বিমানবন্দর, যা ইরানের প্রধান শহরগুলোর সঙ্গে ভালোভাবে সংযুক্ত। সেখানে পৌঁছে, আপনি গাড়ি ভাড়া নিতে পারেন বা বাসে করে মরুভূমিতে যেতে পারেন। এছাড়াও, তেহরান থেকে বাম শহরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট নেওয়া যায়, যা লুত মরুভূমির কাছাকাছি অবস্থিত।

মরুভূমিতে প্রবেশ করার পর, এটি ঘুরে দেখার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো চার চাকার ড্রাইভ যানবাহন বা উটের মাধ্যমে ভ্রমণ। অনেক ট্যুর অপারেটরও রয়েছে, যারা লুত মরুভূমির জন্য সংগঠিত ট্যুরের ব্যবস্থা করে, যেখানে পরিবহন ও গাইড অন্তর্ভুক্ত থাকে। মরুভূমির কিছু অংশ গাড়ি দিয়ে পৌঁছানো সম্ভব নাও হতে পারে, সে ক্ষেত্রে হাঁটতে হবে বা উটে চড়তে হবে। মরুভূমির কঠোর পরিবেশের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি, যথেষ্ট খাবার, পানি ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সঙ্গে রাখা উচিত। 

দাশত ই লুত সম্পর্কে অজানা তথ্য

১। ২০১৫ সালে প্রথম একটি সিক্রেট কম্পাস এক্সপেডিশন টিম লুত মরুভূমিতে পায়ে হেঁটে যাত্রা করে। ২০১৬ সালে তাদের নিয়ে ফিচার করে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি। 

২। কথিত আছে, ১২৭১ সালে বিখ্যাত ভ্রমণকারী মার্কো পোলোও এই মরুভূমিতে এসেছিলেন।

৩। অতিথি পাখিরা লুত মরুভূমি দিয়ে যাবার সময় পথ খুঁজে পায় না। তারা ভুল করে লবনাক্ত পানি পান করে যার ফলে তাদের মৃত্যু ঘটে।

৪। গ্যান্ডম বারিয়ন নিয়ে একটি গুজব প্রচলিত আছে, গম বহনকারী একটি কাফেলা মাটিতে তাদের বোঝা রেখে গিয়েছিল যখন তারা কিছুদিন পরে উট নিয়ে তাদের বোঝা নিতে ফিরে আসে তখন তারা দেখে সব গম ভাঁজা হয়ে গেছে।

৫। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এই মরুভুমিতে পানির সন্ধান মিলবে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে একটি লেকের সৃষ্টি হয়েছে যা ‘শাহাদাদ লেক’ নামে পরিচিত যা শুষ্ক মৌসুমে দেখা যায়না।

তথ্যসূত্র

Related posts

ডায়াটলোভ পাসের অমীমাংসিত রহস্য: দুর্ঘটনা নাকি অন্য কিছু?

আবু সালেহ পিয়ার

বাংলার ভূত: মেছোভূত থেকে নিশির ডাক

সাম্রাজ্যবাদী রবার্ট ক্লাইভ ও তাঁর মৃত্যু রহস্য

আবু সালেহ পিয়ার

Leave a Comment

Table of Contents

    This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More