“যে এই সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে… সে আর কখনো ফিরে আসে না…”
অন্ধকার, নীরবতা… আর ইতিহাসের ধুলোয় ঢাকা এক রহস্যময় পথ।
লালবাগ কেল্লার দক্ষিণ-পূর্ব দেয়ালের সেই পুরনো লোহার গেট, তালাবদ্ধ, নিষিদ্ধ, আর তার পেছনে অন্ধকারে ডুবে থাকা সুড়ঙ্গপথ! ঢাকার কেন্দ্রে অবস্থিত মুঘল স্থাপত্যের এই অপূর্ব নিদর্শনটি শুধু তার বিশাল দেয়াল আর জটিল নকশার জন্যই নয়, বরং এর গোপন সুড়ঙ্গকে ঘিরে থাকা রহস্যের জন্যও বিখ্যাত।
এর প্রতিটি পাথর যেন বলে এক অজানা গল্প। আর লোকমুখে ভেসে বেড়ায় ভয়াল গুজব! লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে, এই সুড়ঙ্গে যে প্রবেশ করে, সে আর ফিরে আসে না। সত্যিই কি এই গোপন সুড়ঙ্গ মৃত্যুর ফাঁদ? নাকি এটি কেবল ইতিহাসের ধুলোয় ঢাকা এক কল্পিত রহস্য?
ঢাকার ইতিহাসে লালবাগ কেল্লার গুরুত্ব
ঢাকা শহরের যতগুলো বিনোদন ও ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম এবং ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম হলো লালবাগ কেল্লা। এটি শুধু একটি পর্যটনকেন্দ্র নয়, বরং তিন শত বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহনকারী এক অনন্য নিদর্শন। মুঘল স্থাপত্যশৈলীর এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে এটি আজও দাঁড়িয়ে আছে গৌরবের প্রতীক হয়ে।
লালবাগ দুর্গে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে এর নানা আকর্ষণীয় উপাদান। দুর্গের প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে পরী বিবির সমাধি, সুরম্য দ্বিতল দরবার হল, তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ, একটি পুকুর ও হাম্মামখানা। এসব উপাদান শুধু স্থাপত্যগত সৌন্দর্য নয়, বরং ইতিহাসের ছোঁয়া বহন করে চলেছে শতাব্দীর পর শতাব্দী।
এই দুর্গে তিনটি সুদৃশ্য তোরণ রয়েছে, যার মধ্যে দক্ষিণ তোরণ স্থাপত্যগুণে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। এই তোরণের পাশে রয়েছে ছাদহীন ছয় দরজার একটি আয়তাকার কক্ষ, যা এক সময় প্রহরীদের ব্যবহারের জন্য নির্মিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। পাশাপাশি রয়েছে প্রায় ৪৫০ ফুট দীর্ঘ দুর্গ প্রাচীর ও প্রতিরক্ষার জন্য নির্মিত অষ্টকোণাকৃতি বুরুজ, যা দুর্গের নিরাপত্তা ও কৌশলগত গুরুত্বের পরিচয় দেয়।
পরী বিবির সমাধি এই দুর্গের সবচেয়ে স্পর্শকাতর ও সৌন্দর্যমণ্ডিত অংশ। মার্বেল ও কষ্টিপাথরে অলংকৃত এই সমাধিটি মুঘল শৈলীর এক অনন্য নিদর্শন। এর পাশেই অবস্থিত মসজিদটির অষ্টকোণী মিনার ও ছোট গম্বুজগুলো, যা নজরকাড়া নকশার মাধ্যমে দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।
দরবার হলের একটি অংশ বর্তমানে একটি জাদুঘরে পরিণত হয়েছে, যেখানে লালবাগ দুর্গ ও মুঘল ইতিহাস সম্পর্কিত নানা নিদর্শন প্রদর্শিত হয়। এখানে দেখা যায় পরী বিবির সমাধিলিপি, যুবরাজ আজম শাহের প্রতিকৃতি, ব্যবহৃত অস্ত্র, প্রাচীন মুদ্রা, রাজকীয় কার্পেট ও ফরমান।
লালবাগ কেল্লার ঐতিহাসিক পটভূমি
লালবাগ কেল্লার ইতিহাস শুরু হয় মুঘল স্থাপত্য-এর এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব ও তার পুত্র আযম শাহর নাম। ১৬৭৮ সালে আওরঙ্গজেবের পুত্র সুবেদার আযম শাহ ঢাকায় আসেন এবং এখানে মুঘল সুবেদারদের জন্য একটি স্থায়ী প্রাসাদ-দুর্গ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। অত্যন্ত জটিল নকশায় নির্মিত এই দুর্গের নাম দেওয়া হয় ‘কিল্লা আওরঙ্গবাদ’। দুর্গের প্রাথমিক অংশ হিসেবে একটি মসজিদ ও দরবার হল নির্মাণ করা হয়। তবে কিছুদিন পরই সম্রাট আওরঙ্গজেব তাকে দিল্লিতে ফিরিয়ে নেন, ফলে এই স্থাপনার নির্মাণকাজ স্থগিত হয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে সুবেদার শায়েস্তা খাঁ যখন দ্বিতীয়বার ঢাকায় আসেন, তখন তিনি দুর্গের নির্মাণকাজ আবার শুরু করেন। জানা যায়, তার কন্যা পরী বিবির সঙ্গে আযম শাহর বিয়ে ঠিক হয়েছিল এবং আযম শাহর অনুরোধেই শায়েস্তা খাঁ এই কাজ শুরু করেন। কিন্তু ১৬৮৪ সালে পরী বিবির আকস্মিক মৃত্যু ঘটে। শায়েস্তা খাঁ এই ঘটনাকে অশুভ প্রতিকৃতি হিসেবে গ্রহণ করেন এবং দুর্গের নির্মাণকাজ মাত্র ১২ শতাংশ সম্পন্ন করেই তা বন্ধ করে দেন। পরী বিবির স্মৃতিতে তিনি নির্মাণ করেন একটি চিত্তাকর্ষক সমাধিসৌধ, যা আজও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। এ কারণেই ঢাকার ইতিহাসে লালবাগ কেল্লার গুরুত্ব বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এটি শুধু একটি দুর্গ নয়, বরং মুঘল আমলের একটি অপরিহার্য স্মারক।
মুঘল আমলের অবসানের পর যখন রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত হয়, তখন লালবাগ দুর্গ ধীরে ধীরে গুরুত্ব হারায় ও পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকার পর ১৮৪৪ সালে এটি ‘লালবাগ’ নামে পরিচিতি লাভ করে। তবে সময়ের পরিক্রমায়, এর রহস্যময় অংশ, বিশেষ করে লালবাগ কেল্লার নিষিদ্ধ অংশ ও গোপন সুড়ঙ্গ, আজও পর্যটকদের কৌতূহলের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। এই ইতিহাস ও স্থাপত্যগাঁথা মিলে লালবাগ কেল্লা একাধারে ইতিহাসপ্রেমী ও সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য এক অমূল্য ঐতিহ্য হয়ে উঠেছে।
রহস্যময় সুড়ঙ্গের উৎপত্তি
লালবাগ কেল্লার সুড়ঙ্গ নিয়ে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসছে নানা গল্প। এই সুড়ঙ্গের ইতিহাস অনেকটাই রহস্যে ঘেরা, তবে অনেক ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যবিদ মনে করেন, এর উৎপত্তি মুঘল আমলেই, জমিদার শাসনকাল থেকেও পূর্বে। পুরো কেল্লার নিচে এক জটিল গোপন সুড়ঙ্গপথ ছড়িয়ে রয়েছে বলে ধারণা করা হয়, যার মধ্যে একটি সুড়ঙ্গ এতটাই রহস্যময় যে, স্থানীয়দের মুখে বলা হয় ‘এই পথে একবার প্রবেশ করলে আর ফিরে আসা যায় না।’ এই বিশ্বাসের পেছনে আছে বহু পুরোনো কাহিনি ও নিখোঁজ হওয়ার দাবি, যা আজও সমাধানহীন।
স্থাপত্য বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করেন, এই সুড়ঙ্গটি প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরের টঙ্গী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত, যা হয়তো মুঘল শাসকদের গোপন পালানোর পথ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কেউ কেউ আবার মনে করেন, এটি কোনো জলাধারের মুখ, যার ভেতরে একটি বিশাল চৌবাচ্চার মতো জলাধান রয়েছে, যেখানে কেউ একবার পড়লে আর উদ্ধার সম্ভব নয়। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটিও বলা হয়, যুদ্ধকালীন সংকটে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য এই ধরণের সুড়ঙ্গ বানানো হতো।
মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পর যখন লালবাগ দুর্গ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়, তখন এই সুড়ঙ্গের গুজব ও কল্পনা ঢাকাবাসীর কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বহু মানুষ সুড়ঙ্গের গোপন রহস্য উদঘাটনের জন্য আকৃষ্ট হন, কিন্তু সরকার এর নিরাপত্তা ও ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে সুড়ঙ্গটির মুখ লোহার গেট দিয়ে চিরতরে বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে এটি লালবাগ কেল্লার নিষিদ্ধ অংশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে প্রবেশ কঠোরভাবে নিষেধ।
লালবাগ কেল্লার গোপন সুড়ঙ্গ রহস্য
লালবাগ কেল্লার ভেতরে থাকা সুড়ঙ্গ নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত রয়েছে। অনেক মানুষ মনে করেন, এটি মুঘল আমলের তৈরি একটি গোপন পালানোর পথ ছিল। যুদ্ধের সময় যদি রাজা বা সেনারা বিপদে পড়তেন, তখন তারা এই সুড়ঙ্গ দিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যেতেন। ধারণা করা হয়, এই সুড়ঙ্গ বুড়িগঙ্গা নদীর দিকে চলে গেছে।
তবে এই সুড়ঙ্গকে ঘিরে অনেক ভূতের গল্পও আছে। কেউ বলেন, রাতে সুড়ঙ্গের ভিতর থেকে অদ্ভুত আওয়াজ শুনা যায়। আবার কেউ কেউ রহস্যময় ছায়া বা পুরনো পোশাক পরা মানুষের মতো কিছু দেখতে পান। এমনকি অনেকেই বলেন, যারা এই সুড়ঙ্গে ঢুকেছে, তারা আর ফিরে আসেনি। কেউ কেউ তো সেখানে হারিয়ে গেছেন বা মারা গেছেন বলেও শোনা যায়।
লোককাহিনী ও অলৌকিক গল্প
লোকমুখে শোনা যায়, মুঘল সেনাপতিরা নদীর শীতল বাতাস উপভোগ করতে এই সুড়ঙ্গ ব্যবহার করতেন। আবার কেউ কেউ বলেন, এই সুড়ঙ্গ নাকি দিল্লি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল! যদিও এটি বাস্তবসম্মত নয়, তবে এমন গল্প আজও ঢাকাবাসীর মুখে মুখে ফেরে।
সবচেয়ে আলোচিত কাহিনীটি ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহকে ঘিরে। সে সময় ব্রিটিশ সেনারা বিদ্রোহী সৈনিকদের ধরতে গিয়ে লক্ষ্য করেন, কয়েকজন বাঙালি সিপাহী লালবাগ কেল্লার মূল সুড়ঙ্গ দিয়ে পালিয়ে যায়। তাদের পিছু নিয়ে ব্রিটিশ সৈন্যরাও সেই সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, তারা কেউই আর ফিরে আসেনি।
ব্রিটিশরা ঘটনাটি তদন্ত করতে শেঁকল বেঁধে দুটি কুকুর পাঠায় সুড়ঙ্গে। পরবর্তীতে আরও দুইটি কুকুর পাঠানো হয়। চারটি কুকুরই আর ফিরে আসেনি, শুধু শেঁকলগুলো ফিরে আসে। এরপরই ব্রিটিশরা সুড়ঙ্গের মুখ লোহার শিকল দিয়ে বন্ধ করে দেয়।
লালবাগ কেল্লার ভূতুড়ে ঘটনা সত্যি কিনা
আজ পর্যন্ত লালবাগ কেল্লার এই সুড়ঙ্গ নিয়ে কোনো বড় ধরনের খননকাজ বা গবেষণা হয়নি। কেল্লার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বলেছেন, এই সুড়ঙ্গকে ঘিরে অনেক ভূতের গল্প চালু আছে, কিন্তু এগুলোর কোনো প্রমাণ নেই।
তবে একটি কথা সত্য যে, মুঘল আমলে যুদ্ধ চলাকালীন যদি সেনারা পরাজয়ের মুখে পড়ত, তখন এই সুড়ঙ্গ দিয়ে তারা দুর্গ থেকে পালিয়ে যেত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সুড়ঙ্গটি খুব অন্ধকার, ভিতরে বাতাস চলাচল করে না, আর পথটাও অনেক জটিল। এ কারণে অনেক সময় ভিতরে ঢুকে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ত বা পথ হারিয়ে ফেলত। তখন মানুষ ভাবত “সুড়ঙ্গে ভূত আছে” বা “এটা মৃত্যু ফাঁদ”।
লালবাগ কেল্লা কেন পর্যটকদের জন্য আংশিক বন্ধ?
শোনা যায়, অতীতে কৌতূহলবশত কয়েকজন সেখানে প্রবেশ করেছিলেন। তারা কেউ আর ফিরে আসেননি, কিংবা কেউ আহত হয়ে ফিরেছেন অথবা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এমন অভিজ্ঞতা থেকেই প্রশাসন বাধ্য হয়ে সুড়ঙ্গের মুখে শক্ত লোহার গেট বসিয়েছে এবং সেটিকে তালাবদ্ধ করে দিয়েছে।
এই পদক্ষেপ মূলত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই নেওয়া হয়েছে। কারণ এখন আর কেউ ভিতরে ঢুকতে পারে না, ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও নেই। একইসঙ্গে এই ব্যবস্থা সুড়ঙ্গটিকে সংরক্ষণ করতেও সহায়তা করছে।
তবুও রহস্যের আকর্ষণ তো থেমে থাকে না। এখনো বহু মানুষ প্রতিদিন সেই বন্ধ গেটের সামনে এসে দাঁড়ান, তাকিয়ে থাকেন নিঃশব্দে। তাঁদের মনে ঘুরপাক খায় একটাই প্রশ্ন- এই রহস্যময় সুড়ঙ্গ কখন খুলবে? এর ভেতরে কী লুকিয়ে আছে?
যে যাই বলুক না কেন, লালবাগ কেল্লার এই গোপন সুড়ঙ্গ এখনো মানুষের মনে একসাথে রোমাঞ্চ আর ভয় জাগিয়ে তোলে। লোহার তালাবদ্ধ সেই গেটের ওপারে ঠিক কী আছে, তা কেউই জানে না। ভেতরে আছে অন্ধকার, নাকি লুকিয়ে আছে ইতিহাসের কোনো বিস্ময়? এ প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা।
সব মিলিয়ে বলা যায়, লালবাগ কেল্লা শুধু একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন নয়, বরং এটি এক রহস্যময় অধ্যায়, যা সময়ের গভীরে হারিয়ে থাকা গল্পগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে। হয়তো একদিন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের গবেষকরা বা কোনো সাহসী বিশেষজ্ঞ আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে এই সুড়ঙ্গের ভেতর প্রবেশ করবেন এবং খুঁজে বের করবেন এর প্রকৃত সত্য।
তথ্যসূত্র-
- https://www.banglakosh.com/mysterious-lalbagh-fort-tunnel/
- https://dhalairdak24.com/%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%97-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AF%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A7%9C%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97/
- https://protidinerbangladesh.com/feature/96574/%E0%A6%87%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%A3%E0%A7%80%E0%A7%9F-%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%97-%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%97