একটি ছোট শহরের ঘরোয়া উদ্যোগ কীভাবে হয়ে উঠলো কোটি মানুষের পায়ের ভরসা? টমাস বাটার স্বপ্ন আর অভিনব ব্যবসায়িক কৌশলের পায়ে পায়ে জড়িয়ে আছে সফলতা আর মানবতার গল্প, যার সাথে যুক্ত আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহান ইতিহাসও।
আরামদায়ক জুতা বলতে প্রথম যে শব্দটি মনে আসে তার নাম বাটা। স্কুলের প্রথম জুতাই হোক বা ঈদের নতুন জুতা, বাটা থাকে সবার পছন্দের তালিকায়। দেশের বেশির ভাগ মানুষ কোনো না কোনো বয়সে বাটার জুতা ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এই কোম্পানির সঙ্গে যে বাংলার কোনো যোগসূত্র নেই এমনটা বললে হয়ত অনেকেই বিশ্বাস করবেন না। এই নামের সঙ্গে মিল রেখেই ঢাকায় একটি জায়গার নাম রাখা হয়েছে ‘বাটা সিগন্যাল’। অথচ বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারী এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় সুদূর সুইজারল্যান্ডের লুসানে অবস্থিত।
একসময় বাটার জুতা পরেননি, এমন মানুষের সংখ্যাও ছিল খুবই হাতেগোনা। ‘অ্যাপেক্স’, ‘লোটো’, কিংবা ‘বে’ ছোট বড় নানা দামের নানা মানের জুতা মেলে বাজারে। কিন্তু জনপ্রিয়তায় এখনো বাটা সবার শীর্ষে অবস্থান করছে।
আজকের লেখায় আমরা জানবো বাটার সুদীর্ঘ, বৈচিত্র্যময় ইতিহাস—যেখানে রয়েছে চেক প্রজাতন্ত্রের ছোট্ট একটি শহর থেকে শুরু করে ভারত, বাংলাদেশসহ নানা দেশে জনপ্রিয়তা অর্জনের গল্প, থাকছে টমাস বাটার উদ্ভাবনী চিন্তা এবং কীভাবে বাটা হয়ে উঠেছে ‘গরিবের জুতা’ নামে পরিচিত এক বিশ্বস্ত নাম।
বাটার জন্মকথা: প্রতিষ্ঠাতা টমাস বাটার অবদান
বাটার যাত্রা শুরু ১৮৯৪ সালের ২৪ আগস্ট, বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্রের মোরাভিয়ায়। টমাস বাটা তার ভাই অ্যান্টোনিন ও বোন অ্যানাকে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেন টি. অ্যান্ড এ. বাটা’স শ্যু কোম্পানি।
টমাস বাটার পরিবার ছিল বংশপরম্পরায় মুচি। ছোট থাকতেই বাবার কাছ থেকে দেখে জুতো সেলাই শিখে নিয়েছিলেন বাটা। সর্বক্ষণ নানা আইডিয়া গিজগিজ করত তার মাথায়। সবসময় চাইতেন ডিজাইনে নতুনত্ব আনতে। সেই ইচ্ছা থেকেই খোলেন বাটা কোম্পানি।
নিজেই জুতো সেলাই করতেন টমাস বাটা। উৎপাদন কম হলেও জুতো টেকসই হওয়ার কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে লাগল তার কোম্পানি। ধীরে ধীরে পসার বাড়তে লাগল। কিন্তু ১৮৯৫ সালে তার ভাই অ্যান্টোনিন চাকরি নিয়ে চলে গেলেন। বিয়ে হয়ে গেল বোন অ্যানারও। একা একা কীভাবে টি. অ্যান্ড এ. বাটাকে বাঁচানো যায় ভাবতে শুরু করলেন টমাস বাটা।
১৯০৪ সালে কয়েকজন বিশ্বস্ত কর্মীকে নিয়ে নতুন ডিজাইন শেখার জন্য পশ্চিমের দেশগুলোতে ঘুরতে বেরোলেন টমাস। মেশিনে জুতো তৈরির কৌশল শিখে নিলেন শিগগিরই। অল্প সময়ে জুতো তৈরির কৌশল শিখে ফিরলেন দেশে। এবার নতুন ধরনের জুতো বানিয়ে কম দামে বাজারে ছাড়লেন।
প্রথমদিকে বাটার লক্ষ্য ছিল শ্রমিকদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ও সম্মানজনক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা। সে কারণে তিনি উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেন এবং শ্রমিকদের জন্য প্রণয়ন করেন ‘বেলার সিস্টেম’ যা একটি অভিনব মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি, এই সিস্টেমের মাধ্যমে উৎপাদন খরচের উপর ভিত্তি করে পণ্যের দাম নির্ধারিত হতো। যার ফলে হু হু করে ছড়িয়ে পড়ল কোম্পানির নাম। বিক্রি বাড়ল ঝড়ের গতিতে।
বিশ্বজুড়ে বাটার বিস্তার ও নীতি পরিবর্তন
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর জন্য জুতো বানানোর ফরমায়েশ পেলেন টমাস। এর মাধ্যমে টি. অ্যান্ড এ. বাটা কোম্পানির নাম নিজ দেশের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে। কিন্তু বিধি বাম। ১৯১৮ সালে বিশ্বযুদ্ধের পর অর্থনীতি ভেঙে পড়লে লোকসানে পড়ে গেলেন টমাস। কিন্তু হাল ছাড়লেন না তিনি। বলতে গেলে কোনো লাভ না রেখেই দাম কমিয়ে জুতো বিক্রি করতে লাগলেন। বিক্রির সঙ্গে বাড়ল টমাসের নামডাকও। কোম্পানির কারিগরদের অর্থসাহায্য দিলেন, তাদের খাওয়া-পরার ভার নিলেন। ফলে তুঙ্গে উঠল তার জনপ্রিয়তা।
১৯৩২ সালে বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেলেন টমাস। এরপর কোম্পানির হাল ধরলেন টমাসের ভাই অ্যান্টোনিন। প্রতিষ্ঠানটিতে তখন ১৬ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করে। বিশটিরও বেশি শাখা বিস্তৃত হয়েছে বোহেমিয়া, মোরাভিয়া, স্লোভাকিয়ায়। এবার অ্যান্টোনিনের হাত ধরে বাটা ছড়িয়ে পড়ল ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, উত্তর আফ্রিকা ও এশিয়ায়। ব্রাজিল, ব্রিটেন, কানাডায় জমে উঠল বাটার পসার।
মূলত বাটা জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে স্থানীয়করণের কৌশল বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এটি হলো, এক দেশে যা জনপ্রিয়, অন্য দেশে তা নয়—এই ধারণাকে কাজে লাগিয়ে তারা প্রতিটি বাজারে আলাদা নীতি গ্রহণ করে। এর ফলে বাটা হয়ে ওঠে শুধুমাত্র একটি বহুজাতিক ব্র্যান্ড নয়, বরং প্রতিটি দেশের জনগণের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহৃত এক বিশ্বস্ত নাম।
ভারতীয় উপমহাদেশে বাটার আগমন ও প্রতিষ্ঠা
বাটা ১৯৩১ সালে ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় যাত্রা শুরু করে। এখানে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বাটা শু কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড’। প্রাথমিকভাবে একটি ছোট আকারের উৎপাদন ইউনিট থাকলেও খুব দ্রুতই এটি একটি বড় উদ্যোগে পরিণত হয়।
১৯৩৪ সালে হুগলি নদীর তীরে স্থাপিত হয় ‘বাটানগর’—যা শুধু একটি কারখানা নয়, ছিল একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্প শহর। প্রায় ৫০০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে এই শহর, যেখানে ছিল কর্মীদের জন্য আবাসন, স্কুল, হাসপাতাল, খেলার মাঠ, এবং বিনোদনের সুবিধা।
ভারতীয় উপমহাদেশে বাটার এই ভিত্তি স্থাপন ছিল কোম্পানিটির জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা পরবর্তীতে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ব্র্যান্ডটির বিস্তার পাকাপোক্ত করে।
কিভাবে ভারতবাসীর পছন্দের জুতা হয়ে উঠলো বাটা?
ভারতের মতো বৈচিত্র্যময় ও বৃহৎ বাজারে স্থান করে নেওয়া সহজ কাজ ছিল না। তবে বাটা তা সম্ভব করেছে গুণমান এবং সাশ্রয়ী মূল্যের অসাধারণ সমন্বয়ের মাধ্যমে। বাটা এমন জুতা তৈরি করত, যা শুধু টেকসই নয়, আরামদায়কও। ফলে শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র বা অফিসগামী – সকল শ্রেণির মানুষের জন্য তারা প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ডিজাইন ও দামে জুতা বাজারজাত করে।
বাটার সফলতার পেছনে আরেকটি বড় কারণ তাদের বিস্তৃত বিক্রয় নেটওয়ার্ক। ছোট শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলে পর্যন্ত তাদের দোকান বা ডিলারশিপ থাকত। পাশাপাশি, বাটার বিজ্ঞাপনগুলো ছিল দারুণ আকর্ষণীয় ও বার্তাবহ।
বাটার বিজ্ঞাপন
‘ধনুষ্টঙ্কার হইতে সাবধান, সামান্য ক্ষত হইতে মৃত্যু ঘটিতে পারে। জুতা পরুন।’
এটি ছিল ১২৬ বছর বয়সি জুতার ব্র্যান্ড বাটার বিজ্ঞাপন। ১৯৩৮ সালের নভেম্বরে বাটানগর নিউজে প্রকাশিত হয়েছিল এই বিজ্ঞাপন। অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই সে সময় বাংলার গ্রাম-গঞ্জের মানুষের পায়ে জুতার দেখা পাওয়া ছিল দুর্লভ ঘটনা। শহর বা মফস্বলেও জুতা পরার চল তেমন ছিল না। এখনকার মতো একগাদা ব্র্যান্ড, হরেক রকমের ডিজাইনও ছিল না। সে সময় মজবুত, টেকসই জুতা মানেই ছিল বাটা। ডিজাইনের চাকচিক্যের চেয়ে জুতো কতদিন টিকবে, এ নিয়েই চিন্তা ছিল বেশি। ধুলো-ময়লা থেকে পা বাঁচাতে সস্তা ও মজবুত জুতা দরকার ছিল। আর সে চাহিদা মেটানোর দায়িত্ব পালন করত বাটা। কোম্পানিটি কীভাবে উপমহাদেশের মানুষের জুতা পরার অভ্যাস গড়ে তুলতে অবদান রেখেছে, তারই সাক্ষী ওপরের ট্যাগলাইন।
এছাড়া ১৯৯০-এর দশকের দিকে জন্ম নিয়েছেন যারা, তাদের হয়তো ‘ফার্স্ট টু বাটা দেন টু স্কুল’ ট্যাগলাইনের কথা মনে আছে। স্কুল শ্যু থেকে আধুনিক ক্যাজুয়াল জুতা—এ দেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাটার নাম।
বাংলাদেশে বাটার আগমন ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান
বাংলাদেশে বাটা আসে ১৯৬০ সালে। বাংলাদেশ তখনো পূর্ব পাকিস্তান। বাংলার মানুষ সবেমাত্র ভাষার অধিকার আদায় করেছে। প্রতিনিয়ত পশ্চিমের শাসকদের শোষণ নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার হতে থাকে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। প্রতিদিন লম্বা হচ্ছে বঞ্চনার তালিকা, আর একটু একটু করে বাড়ছে অসন্তোষ।
পাকিস্তানিরা বাংলা ভাষীদের গুরুত্বের সঙ্গে না দেখলেও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বাটা এ ভূখণ্ডের মধ্যে সম্ভাবনা দেখতে পায়। ১৯৬২ সালে তারা একটি কারখানা তৈরি করে পূর্ব পাকিস্তানে। আর সেই কারখানাই হয়ে যায় বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
১৯৭০ সালে হল্যান্ডে জন্ম নেয়া অস্ট্রেলীয় নাগরিক ওডারল্যান্ড বাংলাদেশে এসেছিলেন বাটার নির্বাহী পরিচালক হিসেবে। পাকিস্তানি সৈন্যদের ধ্বংসযজ্ঞ দেখে ওডারল্যান্ড তার পক্ষ নির্ধারণ করে ফেলেন। তবে শুধু নীরব সমর্থন দিয়েই নয়, ওডারল্যান্ড নিজেও জীবন বিপন্ন করে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে। তার নেতৃত্বে টঙ্গী-ভৈরব রেললাইনের ব্রিজ, কালভার্ট ধ্বংস করে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর বিদেশি এই বন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার ওডারল্যান্ডকে ভূষিত করে বীর প্রতীক খেতাবে। ওডারল্যান্ডই একমাত্র বিদেশি, যিনি এই রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।
বাংলাদেশে প্রায় ৬৪ একর জায়গা নিয়ে বাটার ২টি কারখানা রয়েছে। যার একটির অবস্থান ধামরাইয়ে আরেকটি টঙ্গীতে। এখানে কাজ করেন ৩ হাজার কর্মী।
‘গরিবের জুতা’ হিসেবে বাটার পরিচিতি
বাটার সঙ্গে ‘গরিবের জুতা’ নামটি জুড়ে আছে এক ধরনের শ্রদ্ধাবোধ নিয়ে। কারণ বাটা এমন একটি ব্র্যান্ড, যাদের শুরু থেকেই লক্ষ্য ছিল উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে টেকসই ও আরামদায়ক জুতা সরবরাহ করা। বাটার এই অন্তর্ভুক্তিমূলক বা ‘inclusive’ দৃষ্টিভঙ্গি এই ব্র্যান্ডটিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় করে তুলতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
একসময় প্রতি বছর নতুন ক্লাস শুরুর আগে ছেলেমেয়েরা বাটা দোকানে যেত পিটি ক্লাসের জন্য জুতা কিনতে। আরেক প্রজন্মের মানুষের হয়তো বাটার ‘নটি বয়’ জুতার কথা মনে আছে। এই জুতা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল দীর্ঘদিন টিকত বলে।
শ্রমজীবী, কৃষক, রিকশাচালক, স্কুলপড়ুয়া – সমাজের এমন সব শ্রেণি, যাদের জন্য ‘ব্র্যান্ডেড’ পণ্য যখন ছিল স্বপ্নের মত ঠিক তখনএকমাত্র বাটা হয়ে উঠে তাদের নিত্যদিনের নির্ভরযোগ্য সঙ্গী। “কম দামে ভালো জুতা” – এই বার্তাই ছিল বাটার মূল পরিচয়।
বাটার ব্যবসায়িক সাফল্যের মূল কৌশল
অভিনব ও চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনকৌশলের সুবাদে অচিরেই বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে বাটার। তাদের বিজ্ঞাপনের কৌশল ধার নিয়েছে অনেক কোম্পানি।
শুরু থেকেই বাটা হরেক রকমের জুতা বিক্রি কওে আসছে। মানুষের প্রয়োজন অনুসারে শ্যু, চটি, কেডসসহ প্রায় সব ধরনের জুতাই বিক্রি করছে কোম্পানিটি। বাটার জুতা সবচেয়ে জনপ্রিয় টেকসই হওয়ার কারণে। আজও সহনীয় দামে সবচেয়ে টেকসই জুতা বিক্রি করা কোম্পানিগুলোর একটি বাটা।
বাংলাদেশের সীমিত আয়ের মানুষের কাছে এ কারণেই বাটার সহনীয় দামের টেকসই জুতা এত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দাম কম রাখার পেছনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বাটার স্থানীয় উৎপাদন ইউনিট।
এছাড়া বাটা বিপণনকৌশলের যে বিষয়টিতে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়, সেটি হলো দাম নির্ধারণ। জুতার মূল্য নির্ধারণে বাটা মনস্তাত্ত্বিক কৌশল খাটায়। খেয়াল করলে দেখবেন, বাটার অধিকাংশ জুতার দাম শেষ হয় ৯ দিয়ে। যেমন, ৪৯৯, ৯৯৯, ১০৯৯ টাকা। দারুণ কাজে দিচ্ছে এই কৌশল। তবে বাটা তাদের জুতার দামও সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যেই রাখে। এমনকি এই সময়ে এসেও বাটার চপ্পলের দাম ১০০ টাকার কম।
গ্রামীণ বিপণন চ্যানেল বাটার বড় শক্তি। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলেও বাটার শোরুম ও ডিলারশিপ আছে। এতে ব্র্যান্ডটির পসার আরও বেড়েছে। বাটার দেওয়া তথ্যানুসারে, দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের ২৬২টি খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়াও দেশজুড়ে কোম্পানিটির পাইকারি ডিপো আছে ১৩টি।
এছাড়া, বাটা কখনোই গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপনের জোয়ার বইয়ে দেয়নি। কোম্পানিটি ক্রেতা টানার জন্য ব্র্যান্ডের গুণমান বজায় রাখায় বিশ্বাসী। মাঝেমধ্যে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিলেও বাটা বেশিরভাগ সময়ই এসব বিজ্ঞাপন দিয়েছে শুধু নতুন পণ্য বা মূল্যছাড়ের খবর জানতে। প্রচারণামূলক কাজে কম খরচ কারণে বাটা তাদের পণ্যের দামও তুলনামূলক কম রাখতে পারে।
‘বাটা’ নামটি শুনলেই কত-শত স্মৃতি এসে ঠোকর মারে আমাদের মাথায়। জীবনের কোনো পর্যায়ে এই ব্র্যান্ডের জুতো পরেনি, এমন মানুষ এ দেশে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।
বাটা একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান হলেও এর অধিকাংশ পণ্য তৈরি হয় বাংলাদেশে। এখানে কাজ করেন বাংলাদেশের মানুষ। এভাবে দেশের অর্থের বড় অংশ দেশেই থেকে যায়। বাংলাদেশের সঙ্গেই একটু একটু করে বেড়ে উঠেছে বাটা। মানুষের পায়ে পায়ে পাড়ি দিয়েছে দেশের সব প্রান্ত। বাটা যেমন আরামদায়ক জুতার ক্ষেত্রে এখনো বাংলাদেশের একচেটিয়া বাজার ধরে রেখেছে, ঠিক তেমনই এই কোম্পানিটি অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। তাই শুধু দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা নয়, বাংলাদেশের মানুষের জীবনে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ও পরম আস্থার নাম বাটা।
তথ্যসূত্র –
- https://www.prothomalo.com/business/corporate/%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%9C%E0%A7%81%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%B9%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%93%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%97%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%আয়া
- https://www.tbsnews.net/bangla/feature/news-details-329211
- https://www.thewall.in/magazine/the-history-of-bata-industrials/tid/109657
- https://uddoktabarta.com/%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%9a%e0%a6%bf-%e0%a6%a5%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%9f%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a7%a7%e0%a7%a9%e0%a7%a6-%e0%a6%ac%e0%a6%9b%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a7%8b-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a1-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%9f%e0%a6%be/