Image default
ইতিহাস ১০১

বিশ্বের প্রথম ২৪ ঘণ্টার নিউজ চ্যানেল: সিএনএন-এর ইতিহাস

সবাই যাকে ‘চিকেন নুডল নেটওয়ার্ক’ বলে উপহাস করেছিল সেই সিএনএন বিশ্বের প্রথম ২৪ ঘণ্টার নিউজ চ্যানেল হিসেবে শুধু সংবাদ পরিবেশন করেনি, এটি বদলে দিয়েছিল কূটনীতি, যুদ্ধ এবং আমাদের বিশ্বকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি। এটি সম্প্রচারের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপ্লবের কাহিনি।

আজকের দিনে আমরা এক তথ্যপ্রবাহের মহাসাগরে বাস করি। ব্রেকিং নিউজ, লাইভ আপডেট, স্ক্রলিং টিকার এর মাধ্যমে সংবাদ এখন আমাদের হাতের মুঠোয়, চব্বিশ ঘণ্টা জাগ্রত। স্মার্টফোনের একটি ক্লিকেই আমরা জেনে যাই বিশ্বের কোন প্রান্তে কী ঘটছে। কিন্তু একবার ভাবুন তো, এমন এক সময়ের কথা, যখন সংবাদ জানার জন্য মানুষকে অপেক্ষা করতে হতো পরদিনের সকালের খবরের কাগজের জন্য, অথবা রেডিও ও টেলিভিশনের নির্দিষ্ট সময়ের বুলেটিনের জন্য। সংবাদ তখন ছিল একটি নির্ধারিত ঘটনা, কোনো অবিরাম প্রবাহ ছিল না।

এই চিত্রটি চিরতরে বদলে দিয়েছিল একটি যুগান্তকারী ধারণা, একটি দুঃসাহসিক স্বপ্ন। সেই স্বপ্নটিই হলো বিশ্বের প্রথম ২৪ ঘণ্টা সংবাদ সম্প্রচারকারী টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন (CNN)। এটি শুধু একটি নতুন টিভি চ্যানেল ছিল না; এটি ছিল এক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ, যা আমাদের সংবাদ দেখার, বোঝার এবং তথ্যের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের পদ্ধতিকেই আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছে। কীভাবে এক স্বপ্নদ্রষ্টার অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং একটি সাহসী বাজি সম্প্রচারের ইতিহাসকে নতুন করে লিখেছিল? চলুন, ফিরে যাওয়া যাক সেই সময়ে, যখন জন্ম হয়েছিল বিশ্বের প্রথম টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলের।

সিএনএন-এর আগে: সংবাদের নির্দিষ্ট গণ্ডি

সিএনএন-এর যুগান্তকারী আত্মপ্রকাশের আগে, টেলিভিশন সংবাদের জগৎ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, টেলিভিশন সংবাদ নিয়ন্ত্রিত হতো মাত্র তিনটি প্রধান নেটওয়ার্কের দ্বারা – এবিসি (ABC), সিবিএস (CBS), এবং এনবিসি (NBC)। এই ‘বিগ থ্রি’ নামে পরিচিত নেটওয়ার্কগুলোই ছিল মানুষের সংবাদ জানার প্রধান উৎস।

তখন সংবাদ ছিল একটি সান্ধ্যকালীন রুটিন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মাত্র ৩০ মিনিটের জন্য নির্ধারিত সময়ে সংবাদ বুলেটিন প্রচারিত হতো। মানুষ তাদের দিনের কাজ শেষ করে পরিবারের সাথে টেলিভিশনের সামনে বসত দিনের প্রধান খবরগুলো জানার জন্য। ওয়াল্টার ক্রনকাইটের মতো কিংবদন্তি সংবাদ উপস্থাপকদের গম্ভীর কণ্ঠেই তারা ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে শুরু করে চাঁদে অবতরণের মতো ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর খবর পেতেন। ক্রনকাইট তার সংবাদ শেষ করতেন এই বলে, “And that’s the way it is” – যার অর্থ ছিল, দিনের জন্য এটাই শেষ কথা, এটাই বাস্তবতা। এই বাক্যটিই ছিল সেই যুগের সংবাদের সীমাবদ্ধ কিন্তু কর্তৃত্বপূর্ণ চরিত্রের প্রতীক।

সাদা কালো আমলের দৈনিক পত্রিকা

সেই সময়ে, নেটওয়ার্কগুলোর নিউজ ডিভিশন বা সংবাদ বিভাগকে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ হিসেবে দেখা হলেও, এটিকে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে গণ্য করা হতো না। এটি ছিল একটি গণসেবামূলক দায়িত্ব। নেটওয়ার্কগুলো তাদের সংবাদ বিভাগের জন্য গর্ববোধ করত, কিন্তু ২৪ ঘণ্টা সংবাদ প্রচার করার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারত না। তাদের কাছে এটি ছিল এক অবাস্তব এবং আর্থিকভাবে অসম্ভব একটি ধারণা। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতাও ছিল। ফিল্ম ক্যামেরায় শুটিং করে সেই ফিল্ম প্রসেস করে, এডিট করে সম্প্রচার করা ছিল এক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কে দেখবে রাত ৩টায় খবর? এই প্রশ্নটিই ছিল সেই সময়ের প্রচলিত চিন্তাধারার মূল ভিত্তি।

এই শান্ত, নিয়ন্ত্রিত এবং অনুমানযোগ্য সংবাদের জগতেই এক নতুন ঝড় তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন একজন মানুষ, যিনি প্রচলিত কোনো নিয়ম মানতে রাজি ছিলেন না।

এক স্বপ্নদ্রষ্টার বাজি: টেড টার্নার ও ‘চিকেন নুডল নেটওয়ার্ক’

রবার্ট এডওয়ার্ড “টেড” টার্নার ছিলেন প্রচলিত মিডিয়া জগতের বাইরের একজন মানুষ। তিনি ছিলেন একজন সফল বিলবোর্ড ব্যবসায়ী, একজন দুঃসাহসী ইয়ট রেসার এবং একজন বর্ণময় ব্যক্তিত্ব, যিনি ঝুঁকি নিতে ভালোবাসতেন। তার ডাকনাম ছিল “দ্য মাউথ অফ দ্য সাউথ”। তিনি নিউ ইয়র্কের প্রতিষ্ঠিত মিডিয়া 

টেড টার্নার

মোঘলদের চ্যালেঞ্জ করতে ভালোবাসতেন। ১৯৭০-এর দশকে তিনি আটলান্টা-ভিত্তিক একটি ছোট টেলিভিশন স্টেশন কিনে সেটিকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সারা দেশে সম্প্রচার করে আমেরিকার প্রথম ‘সুপারস্টেশন’, টিবিএস (TBS) তৈরি করেন। এই সাফল্য তাকে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির অপার সম্ভাবনা দেখিয়েছিল।

এই অভিজ্ঞতা থেকেই টার্নারের মাথায় আসে তার সবচেয়ে দুঃসাহসী ধারণাটি: এমন একটি টেলিভিশন চ্যানেল, যা শুধু সংবাদই প্রচার করবে, ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহের সাত দিন। তার এই ধারণাটি যখন প্রথম প্রকাশ্যে আসে, তখন মিডিয়া জগতের প্রায় সবাই তাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছিল। নিউ ইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন ডিসি-র মতো সংবাদের কেন্দ্র থেকে দূরে, আটলান্টার মতো একটি শহরে বসে ২৪ ঘণ্টার নিউজ চ্যানেল চালানোর ধারণাটিকে সবাই এককথায় ‘পাগলামি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠিত মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা এর নাম দিয়েছিল ‘চিকেন নুডল নেটওয়ার্ক’ (Chicken Noodle Network), যা দিয়ে বোঝানো হতো যে, এটি একটি সস্তা এবং দুর্বল উদ্যোগ, যা নুডলসের মতোই অল্প সময়ে শেষ হয়ে যাবে।

কিন্তু টেড টার্নার দমে যাওয়ার পাত্র ছিলেন না। তিনি তার সমস্ত সম্পদ এবং বিশ্বাস এই স্বপ্নের পেছনে বাজি রেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “I just knew that the world was ready for it.” শত প্রতিকূলতা, আর্থিক সংকট এবং উপহাস সত্ত্বেও, তিনি তার লক্ষ্য থেকে একচুলও নড়েননি। অবশেষে, ১৯৮০ সালের ১লা জুন, রবিবার সন্ধ্যায়, সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি আসে।

আটলান্টার একটি স্টুডিও থেকে, ডেভিড ওয়াকার এবং লোইস হার্ট, এক দম্পতি সংবাদ উপস্থাপক, বিশ্বের সামনে প্রথমবার সিএনএন-এর সম্প্রচার শুরু করেন। ডেভিড ওয়াকারের প্রথম কথাগুলো ছিল খুবই সাদামাটা কিন্তু ঐতিহাসিক: “Good evening. I’m David Walker.” এরপর লোইস হার্ট বলেন, “And I’m Lois Hart. Now, here is the news.” এই সাধারণ কথাগুলোর মাধ্যমেই সম্প্রচারের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়, যা পৃথিবীকে চিরদিনের জন্য বদলে দেবে।

অস্তিত্বের সংকট ও যুগান্তকারী মুহূর্তগুলো

সিএনএন-এর শুরুর দিনগুলো ছিল অত্যন্ত কঠিন। দর্শকসংখ্যা ছিল কম, বিজ্ঞাপনদাতারা আগ্রহ দেখাচ্ছিল না, এবং প্রতিষ্ঠিত নেটওয়ার্কগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা ছিল প্রায় অসম্ভব। হোয়াইট হাউসের প্রেস ব্রিফিংয়ে সিএনএন-এর সাংবাদিকদের পেছনের সারিতে বসতে দেওয়া হতো। অনেকেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, এই ‘চিকেন নুডল নেটওয়ার্ক’ ছয় মাসের বেশি টিকবে না।

কিন্তু কয়েকটি ঐতিহাসিক ঘটনা সিএনএন-কে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার এবং নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ করে দেয়।

প্রেসিডেন্ট রিগ্যানের উপর হামলা (১৯৮১): 

প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানকে যখন গুলি করা হয়, তখন অন্য সব নেটওয়ার্ক তাদের নিয়মিত অনুষ্ঠানমালায় ফিরে গেলেও, সিএনএন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে লাইভ কভারেজ চালিয়ে যায়। এই ঘটনাই প্রথমবার প্রমাণ করে যে, একটি ব্রেকিং নিউজের সময় ২৪ ঘণ্টার একটি চ্যানেলের প্রয়োজনীয়তা কতটা।

স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার ডিজাস্টার (১৯৮৬)

উৎক্ষেপণের ৭৩ সেকেন্ডের মাথায় স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার যখন বিস্ফোরিত হয়, তখন সিএনএন সেই মর্মান্তিক ঘটনার লাইভ সম্প্রচার করে। পরবর্তী কয়েকদিন ধরে তারা অবিরামভাবে এই ঘটনার কভারেজ চালিয়ে যায়, যা পুরো জাতিকে শোক পালনে একত্রিত করেছিল।

সিএনএন টিভি চ্যানেলে স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার ডিজাস্টার সরাসরি সম্প্রচারের সময়

বার্লিন প্রাচীরের পতন (১৯৮৯)

সিএনএন স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকেও বিশ্বজুড়ে মানুষের ড্রয়িং রুমে সরাসরি পৌঁছে দেয়।

তবে যে ঘটনাটি সিএনএন-কে একটি আমেরিকান নিউজ চ্যানেল থেকে এক বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিল, তা হলো ১৯৯১ সালের প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ।

উপসাগরীয় যুদ্ধ: 

মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট যখন ইরাকের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম’ শুরু করে, তখন বাগদাদে বোমাবর্ষণ শুরু হওয়ার সাথে সাথে অন্য সব দেশের সাংবাদিকরা শহর ছেড়ে পালিয়ে যান। কিন্তু তিনজন সিএনএন রিপোর্টার – বার্নার্ড শ, জন হলিম্যান এবং পিটার আর্নেট তাদের আল-রশিদ হোটেলের রুমে থেকে লাইভ সম্প্রচার চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।  রাতের আকাশে যখন একের পর এক মিসাইল আঘাত হানছিল, হোটেলের রুম থেকে তাদের অডিও রিপোর্টিং ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ  সংবাদ। পুরো বিশ্ব যেন তাদের কানের মাধ্যমে যুদ্ধক্ষেত্রকে অনুভব করছিল। হোটেলের সাইরেনের শব্দ, বিস্ফোরণের আওয়াজ আর রিপোর্টারদের উত্তেজিত কিন্তু শান্ত কণ্ঠ সব মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এই তিনজন রিপোর্টার “বয়েজ অফ বাগদাদ” নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ, এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশ এবং অন্যান্য বিশ্ব নেতারাও, যুদ্ধের সর্বশেষ তথ্য জানার জন্য সিএনএন দেখছিলেন।

এই ঘটনাই সিএনএন-কে রাতারাতি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি এনে দেয়। ‘চিকেন নুডল নেটওয়ার্ক’ থেকে এটি পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্ভরযোগ্য সংবাদ মাধ্যমে। টেড টার্নারের স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবে পরিণত হয়েছিল।

“সিএনএন প্রভাব”: সংবাদ যেভাবে পৃথিবীকে বদলে দিল

উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে একটি নতুন টার্ম জনপ্রিয় হয় “সিএনএন প্রভাব” (The CNN Effect)। এর মূল কথা হলো, ২৪ ঘণ্টার লাইভ সংবাদ কভারেজ এখন আর শুধু সংবাদ পরিবেশন করে না, এটি সরাসরি আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং সরকারের নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে। সোমালিয়ার দুর্ভিক্ষ বা বসনিয়ার যুদ্ধের মতো মানবিক সংকটগুলোর সচিত্র প্রতিবেদন বিশ্বজুড়ে জনমত তৈরি করতে এবং সরকারগুলোকে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য করতে শুরু করে। সংবাদ আর ঘটনার পরের প্রতিক্রিয়া ছিল না, এটি নিজেই একটি ঘটনা হয়ে উঠেছিল।

এর ফলে আমাদের সংবাদ গ্রহণের পদ্ধতিতেও এক বিরাট পরিবর্তন আসে। আমরা আর সংবাদের জন্য অপেক্ষা করতাম না; সংবাদই আমাদের জীবনে অবিরামভাবে প্রবেশ করতে শুরু করে। বিশ্ব অনেক ছোট হয়ে আসে। পৃথিবীর এক প্রান্তের ঘটনা অন্য প্রান্তের মানুষের মনে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলতে শুরু করে।

টেলিভিশনে সংবাদের বিবর্তন ও ভবিষ্যৎ

সিএনএন-এর সাফল্য টেলিভিশন সংবাদের জগতে এক নতুন প্রতিযোগিতার জন্ম দেয়। ১৯৯৬ সালে রুপার্ট মার্ডকের ফক্স নিউজ এবং মাইক্রোসফট ও এনবিসি-র যৌথ উদ্যোগে এমএসএনবিসি (MSNBC) চালু হয়। এরপর বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ, আল জাজিরা-র মতো আন্তর্জাতিক চ্যানেলগুলোও ২৪ ঘণ্টার সংবাদ সম্প্রচার শুরু করে।

তবে এই অবিরাম সংবাদ চক্রের একটি নেতিবাচক দিকও রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা সময় পূরণ করার জন্য চ্যানেলগুলোকে সংবাদের পাশাপাশি প্রচুর বিশ্লেষণ, টক শো এবং মতামতের ওপর নির্ভর করতে হয়। এর ফলে, অনেক সময় সংবাদের চেয়ে মতামতের গুরুত্ব বেড়ে যায় এবং “পান্ডিত ক্লাস” বা আলোচকদের জন্ম হয়, যাদের কাজই হলো বিতর্ক তৈরি করা। এটি অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ব্যবহার এবং sensationalism-কে উস্কে দিয়েছে। “If it bleeds, it leads” এই ধারণাটি ২৪ ঘণ্টার নিউজ চ্যানেলের হাত ধরে আরও শক্তিশালী হয়েছে।

আজ, ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, সিএনএন যে বিপ্লব শুরু করেছিল, তা নিজেই এক নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এখন সংবাদ আরও দ্রুত, আরও ব্যক্তিগত এবং আরও খণ্ডিত। কিন্তু এই ডিজিটাল যুগের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল সিএনএন।

বিশ্বের বিভিন্ন ২৪/৭ টিভি চ্যানেল

টেড টার্নারের সেই ‘পাগলামি’ স্বপ্ন আজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য বাস্তবতা। সিএনএন-এর যাত্রা ছিল এক অবিশ্বাস্য গল্প, এক স্বপ্নদ্রষ্টার ঝুঁকি নেওয়ার সাহস, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং সঠিক সময়ে সঠিক সুযোগকে কাজে লাগানোর এক অসাধারণ উদাহরণ। এটি প্রমাণ করেছে যে, একটি যুগান্তকারী ধারণা দিয়ে পুরো বিশ্বকে বদলে দেওয়া সম্ভব। সিএনএন শুধু বিশ্বের প্রথম ২৪ ঘণ্টার নিউজ চ্যানেলই ছিল না, এটি ছিল একটি নতুন যুগের সূচনা, যা আমাদের শিখিয়েছে যে, সংবাদ কখনও ঘুমায় না।

তথ্যসূত্র –

Related posts

জিন্সের অজানা ইতিহাস: শ্রমিকের পোশাক থেকে ফ্যাশনের রাজা!

বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর গ্যাংদের ইতিহাস: রক্তাক্ত অপরাধ, ক্ষমতার লড়াই ও অন্ধকার সাম্রাজ্য

ফাবিহা বিনতে হক

গাঁজা দিয়েই চলতো স্কুল-চিকিৎসা-মসজিদ: সত্যিই কি?

Leave a Comment

Table of Contents

    This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More