আখরোট, জাফরান, আপেল আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সম্ভার ভারতের জম্মু-কাশ্মীর উপত্যকা জুড়ে। শেষ বর্ষায় হিমালয়ের পাহাড়ঘেরা কাশ্মীরি উপত্যকায় ভাসে জাফরান ফুলের সুবাস। সেই সুবাসে হানা দেয় বারুদের গন্ধ। বছরের পর বছর ধরে চলমান বিবাদে উত্তাল কাশ্মীর। কিন্তু কেন?
পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গের নাম কাশ্মীর। কাশ্মীর নাম শুনলেই চোখে ভাসে তুষারাবৃত পাহাড় চূড়া, দীঘল উপত্যকা ও সবুজ তৃণভূমির এক চমৎকার সমন্বয়। কিন্তু তা শুধু সৌন্দর্যের বেলায়ই সত্য। কাশ্মীর দেখতে যতটা সুন্দর, কাশ্মীর ঘিরে বিতর্ক আর বিবাদ তার থেকেও বেশি ভয়ংকর।
কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। তবে সব বিতর্ক ছাপিয়ে গেছে এবারের পর্যটক হত্যা। গত ২৩ এপ্রিল কাশ্মীরে বেড়াতে আসা ২৬ জন পর্যটককে গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী।
কাশ্মীর মানেই কেন বিবাদের অন্য নাম? ভারত ও পাকিস্তান কিভাবে কাশ্মীরের দ্বন্দ্বের সাথে জড়িত; কাশ্মীরের ইতিহাস ও তাকে ঘিরে যত বিতর্ক, সবই জানবো আজকের লেখায়।
কাশ্মীরের ভৌগোলিক অবস্থান ও ইতিহাস
ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক দ্বন্দ্ব হচ্ছে ভারত–পাকিস্তান দ্বন্দ্ব এবং এই দ্বন্দ্বের অন্যতম প্রধান কারণ হলো কাশ্মির সমস্যা। কাশ্মীর প্রধানত মধ্য হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত। আর এ অঞ্চলটি বর্তমানে ভারত, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে বিভক্ত।
ভারত পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির এবং চীন-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরকে নিজস্ব ভূমি হিসেবে দাবি করে। অন্যদিকে, পাকিস্তান ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরকে নিজস্ব ভূমি হিসেবে দাবি করে। আবার, চীন ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের লাদাখ অঞ্চলটি নিজস্ব ভূমি হিসেবে দাবি করে।
২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী ভারত জম্মুর বেশিরভাগ অংশ কাশ্মীর উপত্যকা , লাদাখ ও শিয়াচেন হিমবাহ নিয়ে প্রায় ৪৩% শাসন করছে। অন্যদিকে আজাদ কাশ্মীর, গিরগিট বালুচিস্তানের উত্তরাঞ্চলসহ প্রায় ৩৭% নিয়ন্ত্রণ করে পাকিস্তান। আর চীনের দখলে রয়েছে এই অঞ্চলের ১৫% জায়গা।
কাশ্মীর সমস্যা কিভাবে শুরু হলো?
কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিবাদ মূলত দেশভাগের সময় থেকেই শুরু হয়। ব্রিটেন থেকে ভারত পাকিস্তান ১৯৪৭ সালে যখন স্বাধীনতা পায়, তখনই দুই দেশই কাশ্মীরকে পাওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিল। ভারত পাকিস্তান ভাগ করার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাশ্মীর দুই দেশ থেকেই মুক্ত ছিল।
তবে তৎকালীন কাশ্মীরের স্থানীয় শাসক বা রাজা হরি সিং ভারতকে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি একটি চুক্তির মাধ্যমে কাশ্মীরকে ভারতের সাথে অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন।
কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিবাদ কেন?
ইতিহাসবিদরা বলেন, ইনস্ট্রুমেন্ট অব অ্যাক্সেশনের মাধ্যমে কাশ্মীর ভারতের অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল ঠিকই কিন্তু যে শর্তে তা হয়েছিল, সেই শর্ত থেকে ভারত অনেকটা সরে এসেছে। পাকিস্তানও অনেকটা জোর করে এই ব্যবস্থায় ঢুকেছে এবং সেই থেকে সংকট জটিল থেকে আরও জটিল হচ্ছে।
এই অংশের অনেক মানুষ ভারতের শাসনে থাকতে চায় না। তারা পাকিস্তানের সাথে ইউনিয়ন করে যুক্ত হতে অথবা নিজেরা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে থাকতে চায়।
কারণ ভারত শাসিত জম্মু কাশ্মীরে ৬০ শতাংশের বেশি মুসলিম। ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে এই একটি রাজ্য, যেখানে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এছাড়া কাশ্মীরে কর্মসংস্থানের অভাব এবং বৈষ্যমের অনেক অভিযোগ রয়েছে।
ভারত-পাকিস্তান আগে ১৯৬৫ এবং ১৯৯৯ সালে দু`বার যুদ্ধে জড়িয়েছিল কাশ্মীর নিয়ে। তবে বর্তমানে দুই দেশই কিছুটা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকতে চায়, এ কারণে যে, দুই দেশের কাছেই পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।
বছরের পর বছর রক্তক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশই যুদ্ধ বিরতি দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল ২০০৩ সালে। পাকিস্তান পরে ভারত শাসিত কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অর্থ সহায়তা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও শান্তি আসেনি, সমাধানও না।
২০১৬ সাল থেকে আবারও পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাওয়া শুরু করে। ভারত শাসিত কাশ্মীরে দেশটির সামরিক ঘাঁটিতে বেশ কয়েকটি আক্রমণ হয়েছে। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে ১৪ই ফেব্রূয়ারি কাশ্মীরে আত্নঘাতি হামলায় ৪০ জনের বেশি ভারতীয় সৈন্য নিহত হওয়ার মাধ্যমে দুই পক্ষের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের স্বপ্ন একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়ে।
কাশ্মীর সমস্যার মূল কারণ কী?
কাশ্মীর বিদ্রোহী ও ভারতের মধ্যে বিরোধের মূল কারণ হলো স্থানীয় স্বায়ত্ত শাসন। কাশ্মীরের গণতান্ত্রিক উন্নয়ন ১৯৭০ সালের শেষভাগ পর্যন্ত ছিল খুবই সীমিত। ১৯৮৮ সালের মধ্যে ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বহু গণতান্ত্রিক সংস্কার বাতিল হলে পরিস্থিতি জটিল হতে শুরু করে। সেই বছরেই মূলত কাশ্মীরে অস্থিতিশীলতা তৈরী হয়। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী ভারত শাসিত কাশ্মীরে সক্রিয় রয়েছে, কারণ কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গিদের মদদ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্য যুদ্ধ পরিস্থিতি শুরু হওয়ার এটিই মূল কারণ।
কাশ্মীর সমস্যার গভীরে আছে ধর্মীয় পরিচয় ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের দ্বন্দ্ব। কাশ্মীরের অধিকাংশ মানুষ মুসলিম, কিন্তু তা ভারতের একটি রাজ্য। অনেক কাশ্মীরি চায় স্বায়ত্তশাসন কিংবা স্বাধীনতা, যা ভারত সরকার বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। পাকিস্তান কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করে, যার পেছনে রয়েছে তার ইসলামভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামোর আদর্শ।
কাশ্মীরের মুসলিম জনসংখ্যা ও রাজনীতি
কাশ্মীর উপত্যকার প্রায় ৯০% মানুষ মুসলিম। এখানকার রাজনীতি বরাবরই উত্তাল। স্থানীয় দলগুলো কিছুটা ভারতের পক্ষে থাকলেও, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো স্বাধীন কাশ্মীরের স্বপ্ন দেখে। এদের প্রভাব বাড়ায় জনমনে অনাস্থা ও উত্তেজনা।
কাশ্মীর নিয়ে জাতিসংঘের ভূমিকা
১৯৪৭ সালের দেশভাগের শর্ত অনুসারে এটি হচ্ছে মালিকানার প্রশ্নে ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় দ্বন্দ্ব। ভারতের দাবি, কাশ্মীর তার অবিচ্ছেদ্য অংশ- পাকিস্তান এখানে অনাকাঙ্ক্ষিত দখলদার; কাশ্মীরি জনগণের স্বাধীনতা বা পাকিস্তানে যাওয়ার দাবি ভারতের কাছে বিচ্ছিন্নতাবাদ। পাকিস্তানের দৃষ্টিতে কাশ্মীর সমস্যা হচ্ছে ‘অমীমাংসিত দেশভাগ। এই বিরোধের সূত্র থেকেই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৪৭ সালে। যুদ্ধ চলাকালেই ১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি কাশ্মীর সমস্যাকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তোলে ভারত। জাতিসংঘ তারপর বিভিন্ন রেজুলেশন পাস করে। প্রথম রেজুলেশন (১৯৪৮) অনুসারে জাতিসংঘ একটি কমিশন (ইউএনসিআইপি) তৈরি করে।
দ্বিতীয় রেজুলেশন (১৯৪৮) অনুসারে ইউএন কমিশনের কর্মপরিধি ও সদস্য বাড়ানো হয়। মিলিটারি পর্যবেক্ষক ও মিলিটারি উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়। এর আওতায় প্রথম ইউএন মিলিটারি অবজারভার গ্রুপ ইন ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান (ইউএনএমওজিআইপি) জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীরে আসে ১৯৪৯ সালের জানুয়ারিতে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত মিলিটারি অবজারভার গ্রুপের দুটি দপ্তর সক্রিয় আছে কাশ্মীরে। একটি ভারত শাসিত অংশে, অন্যটি পাকিস্তান শাসিত অংশে। স্বাধীন কাশ্মীরের দাবিদার এক বুদ্ধিজীবী এই লেখককে বলেছিলেন, ‘মিলিটারি অবজারভার গ্রুপের উপস্থিতি এখনও প্রমাণ করছে যে কাশ্মীর একটি আন্তর্জাতিক বিরোধ।
জাতিসংঘের ৫ জানুয়ারি ১৯৪৯ তারিখের রেজুলেশন অনুসারে জাতিসংঘের কমিশনের তত্ত্বাবধানে গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে পাকিস্তান রাজি ছিল। কিন্তু ভারত তা চায়নি কারণ ভারত জানে, কাশ্মীরের অধিকাংশ মানুষ পাকিস্তানেই নিজেদের ঠিকানা গড়তে চাইবে।
১৯৫৭ সালে আবারও গণভোট করতে চাইলে সেটিও সফলতার মুখ দেখেনি রাশিয়ার ভেটো দেওয়ার কারণে। ১৯৫৭ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সিকিউরিটি কাউন্সিল ইউএন প্রতিনিধিকে কাশ্মীর পাঠান। ১৯৫৮ সালে ওই প্রতিনিধি তার রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে একটি কনফারেন্স প্রস্তাব করেন, যা পাকিস্তান গ্রহণ করলেও ভারত অস্বীকার করে। অর্থাৎ, দিন শেষে ক্ষমতার রাজনীতিই প্রভাব বিস্তার করে।
স্পষ্টতই, ১৯৫৮ সালের পর থেকে কাশ্মীর সংকটের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ভূমিকা রিপোর্টিং, বিবৃতি ও উদ্বেগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ১৯৬৫ সালে আবারও কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে যুদ্ধ বাধে দুই দেশে। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ১৯৬৬ সালের ১০ জানুয়ারি তাসখন্দ চুক্তি সই হয়। সে অনুসারে উভয় পক্ষ একে অপরের এলাকা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে। দুই দেশ দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানে আলোচনা চালানোর ঘোষণা দেয়। মূলত, এই চুক্তি কাশ্মীর সমস্যাকে আবারও ঝুলিয়ে দিয়ে কাশ্মীরের প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের আগ্রহ কমিয়ে দেয়।
৩৭০ ধারা রদের পর কাশ্মীরের অবস্থা
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট, ভারত সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে, যা জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল। এই ধারা অনুযায়ী, কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান, পতাকা ও ভূমি আইনের অধিকার ছিল।
অনুচ্ছেদ ৩৭০’এর কারণে পাওয়া স্বায়ত্বশাসনের অধিকার অবশ্য ১৯৫০ এবং ১৯৬০’এর দশকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তের জন্য বেশ খর্ব হয়।
১৯৬০’এর দশকের মাঝামাঝি সময়ের পর অনুচ্ছেদ ৩৭০’এর যতটুকু কার্যকর ছিল তার সিংহভাগকেই প্রতীকি বলা চলে – রাজ্যের একটি আলাদা পতাকা, ১৯৫০’এর দশকে তৈরি করা একটি রাজ্য সংবিধান, যেটি একতাড়া কাগজের বেশি কিছু নয়, এবং রাজ্যের বিচারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য কাশ্মীরের পেনাল কোডের অবশিষ্টাংশ, যেটি ১৮৪৬ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত কাশ্মীরের জন্য কার্যকর ছিল।
যদিও ভারত সরকার বলেছে, এটি উন্নয়নের জন্য করা হয়েছে, কিন্তু বিরোধীরা একে “ঐতিহাসিক বিশ্বাসঘাতকতা” বলে আখ্যা দেয়।
অনুচ্ছেদ ৩৭০ রদ করার কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করে আসছেন, কাশ্মীরকে স্বায়ত্বশাসন দেয়া ঐ অনুচ্ছেদই সেখানে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদ’ তৈরি করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।
আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও বৈশ্বিক রাজনীতি
কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বেশ সংবেদনশীল। চীন যদিও সরাসরি কাশ্মীরের সীমানার সঙ্গে যুক্ত একটি পক্ষ। তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অমীমাংসিত রাজ্যটির বিরাট এলাকা। কিন্তু, দেশটি এই ইস্যুতে বরাবরই নীরব কূটনীতির অনুসারি। পাকিস্তানের সঙ্গে দেশটির রয়েছে গভীর ও সুমিষ্ট সম্পর্ক। তবে, সে সম্পর্ক মৌলিকভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিনিয়োগমুখী।
যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলতে গেলে তারা কখনো ভারসাম্য রক্ষা করে চলে, আবার কখনো ভারতের সঙ্গেই অবস্থান নেয়। কাশ্মীর ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান প্রসঙ্গে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন স্টিফেন কোহেন। তিনি তার ১৯৯৩ – ৯৫ সালের মধ্যে লেখা এক নিবন্ধে কাশ্মীর সমস্যার জটিলতা ব্যাখ্যা করে বলেছেন, এটি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসবাদ, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা, ধ্বংস এবং ভীতির সমন্বয়, যা ইতিহাসের কয়েকটি ধাপে গড়ে উঠেছে। বিল ক্লিন্টন ২০০০ সালে কাশ্মীরে সফরের সময় মন্তব্য করেছিলেন, কাশ্মীর হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জায়গা।
তবে, ওআইসি কাশ্মীর ইস্যুতে বরাবরই পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়। মূলত রাজনীতি এবং ধর্ম দুটোই মূল ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে কাশ্মীর বিবাদ এবং আন্তর্জাতিক মহলে এটির পক্ষ-বিপক্ষ অবস্থান নিয়ে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও সমাধানের পথ
ভারত-পাকিস্তান স্বাধীনতা পাওয়ার সময় থেকেই কাশ্মীর লড়াই করছে নিজের পরিচয়ের জন্য। কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের মতামত বা অংশগ্রহণ ছাড়াই এই কাশ্মীরের মালিকানা কিংবা নিয়ন্ত্রণ পরিবর্তন হয়েছে বহুবার। এত বছর ধরে কাশ্মীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নানা সমস্যা চললেও কাশ্মীর সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি আজও। কাশ্মীরের সাধারণ মানুষেরা এখনো স্বপ্ন দেখেন এক স্বাধীন জন্মভূমির। যদিও অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি একরকম অসম্ভব ব্যাপার।
এই সংকটের একমাত্র সমাধান হতে পারে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সংলাপ এবং সেই প্রক্রিয়ায় নকাশ্মীরবাসীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। দুই দেশের মধ্যে বিশ্বাস গড়ে তোলা, পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা জরুরি। একইসাথে, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সমস্যার সমাধান খোঁজাও গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র –
- https://www.bbc.com/bengali/news-47292738
- https://bangla.dhakatribune.com/international/13396/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%8F%E0%A6%A4%E0%A7%8B-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6-%E0%A6%95%E0%A7%80-%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%87%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8
- https://www.ebanglalibrary.com/lessons/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%98-%E0%A6%93/
- https://avijatrik.com/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%80%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%87%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%93-%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%9B%E0%A7%81-%E0%A6%95/
- https://www.thoughtco.com/kashmir-history-and-background-2353435
- https://www.dw.com/bn/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4-%E0%A6%9A%E0%A7%80%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B2%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%87/a-61241433
- https://www.jugantor.com/international/816795