Image default
ইতিহাস ১০১

জিন্সের অজানা ইতিহাস: শ্রমিকের পোশাক থেকে ফ্যাশনের রাজা!

প্রতিটি জিন্সের সেলাইয়ের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে ইতিহাস।  জিন্সকে ধরা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে গণতান্ত্রিক পোশাক। কারণ ফর্মাল থেকে ক্যাজুয়াল, ধনী থেকে গরীব; সবাই জিন্স ব্যবহার করে আমাদের সবাইকে এক সুতোয় বাঁধে, প্রত্যেককে দেয় নিজস্ব স্টাইল তৈরি করার স্বাধীনতা।

একবার আপনার ওয়ারড্রোবের কথা ভাবুন। সেখানে এমন কোন পোশাকটি আছে, যা আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে পরে যান, বন্ধুদের সাথে বিকেলে আড্ডা দিতে পরেন, কোথাও ঘুরতে গেলে, এমনকি মাঝে মাঝে শার্টের সাথে সেমি-ফরমাল অনুষ্ঠানেও চালিয়ে দেন? কোনো সন্দেহ ছাড়াই বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের উত্তর হবে, ‘একজোড়া জিন্স’। আজকের পৃথিবীতে জিন্স শুধু একটি পোশাক নয়, এটি আমাদের ব্যক্তিত্ব ও সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। এটি আরাম, স্টাইলের পাশাপাশি বিদ্রোহ এবং তারুণ্যেরও এক বিশ্বজনীন প্রতীক।

কিন্তু এই যে আমাদের এত প্রিয় এবং নিত্যদিনের সঙ্গী, এই জিন্সের প্যান্টটি কোথা থেকে এলো, তা কি আমরা কখনও ভেবে দেখেছি? এর পেছনের গল্পটি কোনো প্যারিসের ফ্যাশন হাউসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শো রুম থেকে শুরু হয়নি। এর জন্ম হয়েছিল উনিশ শতকের আমেরিকার গনগনে রোদে, ক্যালিফোর্নিয়ার স্বর্ণের খনিতে কাজ করা শ্রমিকদের ঘামে ভেজা শরীর থেকে। 

জিন্স প্যান্ট হলো এক জার্মান অভিবাসীর স্বপ্ন, এক সাধারণ দর্জির যুগান্তকারী উদ্ভাবন এবং সময়ের সাথে সাথে বদলে যাওয়া এক সাংস্কৃতিক বিপ্লবের জীবন্ত কাহিনি। আজ আমরা জানব কীভাবে খনিশ্রমিকদের জন্য তৈরি একজোড়া মোটা কাপড়ের প্যান্ট হয়ে উঠল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গণতান্ত্রিক পোশাক।

জিন্সের জন্মকথা

জিন্সের গল্প শুরু করতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে লেভি স্ট্রসেরও আগে, ইউরোপের দুটি শহরে, যেখানে জিন্সের ডিএনএ তৈরি হয়েছিল। জিন্স তৈরির মূল উপাদান যে ডেনিম, তার নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এর উৎপত্তিস্থল। ফ্রান্সের নিম (Nîmes) শহরে এক বিশেষ ধরনের মজবুত এবং টেকসই সুতির কাপড় তৈরি হতো। এই কাপড়টি তার উৎপত্তিস্থলের নামানুসারে “সার্জ ডি নিম” (Serge de Nîmes) নামে পরিচিত ছিল। এই ‘ডি নিম’ কথাটিই কালের বিবর্তনে মানুষের মুখে মুখে হয়ে যায় ‘ডেনিম’। এই কাপড়টি ছিল অত্যন্ত টেকসই এবং এর বুনন কৌশল ছিল ভিন্ন, যা একে সাধারণ কটন থেকে আলাদা করত।

নাবিকদের পড়নে নীল রঙ্গের সুতির ট্রাউজার

অন্যদিকে, ‘জিন্স’ শব্দটি এসেছে ইতালির বন্দর শহর জেনোয়া (Genoa) থেকে। জেনোয়ার নাবিকরা তাদের লম্বা সমুদ্রযাত্রার জন্য এক ধরনের নীল রঙের সুতির ট্রাউজার পরত, যা ছিল খুব মজবুত এবং সমুদ্রের নোনা আবহাওয়ার জন্য উপযুক্ত। এই কাপড়টিকে বলা হতো ‘ফাস্টিয়ান’। ফরাসিরা জেনোয়া শহরকে ডাকত ‘জ্যাঁ’ (Gênes) নামে, আর সেখান থেকেই জেনোয়ার নাবিকদের পরা এই বিশেষ ধরনের প্যান্টের নাম হয়ে যায় ‘জিন্স’। সুতরাং, ডেনিম হলো কাপড়টির নাম আর জিন্স হলো প্যান্টের ধরনের নাম, যার শিকড় ইউরোপে প্রোথিত। কিন্তু এই দুটিকে একত্রিত করে আজকের আধুনিক জিন্স তৈরির বিপ্লবটি ঘটেছিল আটলান্টিকের ওপারে, আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে, এক প্রয়োজনের তাগিদে।

স্বর্ণের খনি, এক অভিবাসী ও এক যুগান্তকারী আবিষ্কার

সময়টা উনিশ শতকের মাঝামাঝি। ক্যালিফোর্নিয়ায় তখন ‘গোল্ড রাশ’ বা স্বর্ণ অনুসন্ধানের হিড়িক চলছে। ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় আমেরিকার পূর্ব উপকূল এবং ইউরোপ থেকে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছে পশ্চিমে। এই স্বপ্নসন্ধানী মানুষদের মধ্যে ছিলেন লেভি স্ট্রস নামে এক জার্মান-ইহুদি অভিবাসী। তিনি ১৮৫৩ সালে জার্মানির বাভারিয়া থেকে সান ফ্রান্সিসকোতে এসেছিলেন। তবে তিনি সোনা খুঁজতে আসেননি; তিনি এসেছিলেন খনিশ্রমিকদের কাছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করতে। তিনি ছিলেন একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী, যিনি গোল্ড রাশের নতুন অর্থনীতিতে লুকিয়ে থাকা সুযোগটি দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি খনিশ্রমিকদের কাছে তাবু এবং ওয়াগনের ঢাকনা তৈরির জন্য মজবুত ক্যানভাস বা মোটা ত্রিপল বিক্রি করতেন।

লেভি স্ট্রস

অন্যদিকে, নেভাডার রেনো শহরে জ্যাকব ডেভিস নামে একজন দর্জি ছিলেন। তার কাছে প্রায়ই খনিশ্রমিকরা তাদের প্যান্ট মেরামতের জন্য আসত। সেই সময়ের কাজের প্যান্টগুলো খুব দ্রুত ছিঁড়ে যেত। একদিন এক খনিশ্রমিকের স্ত্রী তার কাছে এসে নালিশ করলেন যে, তার স্বামীর প্যান্টের পকেটগুলো কিছুতেই টিকছে না। খনিতে কাজ করার সময় পকেটে ভারী যন্ত্রপাতির স্যাম্পল বা পাথরের টুকরো রাখার ফলে পকেটের কোণাগুলো ছিঁড়ে যেত।

জ্যাকব ডেভিস এই সমস্যার এক দারুণ এবং স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করলেন। তিনি প্যান্টের পকেটের কোণাগুলোর মতো দুর্বল জায়গাগুলোতে, যেখানে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে, সেখানে তামার তৈরি ধাতব রিভেট (Rivet) বা পেরেক লাগিয়ে দিলেন। এই রিভেটগুলো সাধারণত ঘোড়ার সাজ বা কম্বলের মতো জিনিসকে মজবুত করার জন্য ব্যবহার করা হতো। এই ছোট্ট একটি সংযোজন প্যান্টটিকে অবিশ্বাস্যরকম মজবুত এবং টেকসই করে তুলল।

জ্যাকব ডেভিস

জ্যাকব ডেভিসের এই উদ্ভাবনটি ছিল যুগান্তকারী। তিনি বুঝতে পারছিলেন, এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা অসীম। কিন্তু এই নতুন ধারণার পেটেন্ট বা স্বত্বাধিকার নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ৬৮ ডলার তার কাছে ছিল না। তখন তিনি তার কাপড় সরবরাহকারী, অর্থাৎ লেভি স্ট্রসকে একটি চিঠি লিখলেন। চিঠিতে তিনি তার উদ্ভাবনের পুরো ধারণাটি ব্যাখ্যা করেন এবং দুজনে মিলে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পেটেন্ট নেওয়ার প্রস্তাব দেন।

লেভি স্ট্রস এই প্রস্তাবের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সম্ভাবনাটি দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি রাজি হয়ে যান। ১৮৭৩ সালের ২০শে মে, লেভি স্ট্রস এবং জ্যাকব ডেভিস যৌথভাবে তাদের “রিভেট দ্বারা পকেট মজবুত করার পদ্ধতি”-র জন্য মার্কিন পেটেন্ট (U.S. Patent 139,121) লাভ করেন। এই দিনটিকেই আধুনিক ব্লু জিন্সের আনুষ্ঠানিক জন্মদিন হিসেবে ধরা হয়। এভাবেই জন্ম হয় লেভি’স (Levi’s) ব্র্যান্ডের এবং পৃথিবীর প্রথম ‘ওয়েস্টওভারঅল’ বা জিন্সের, যা মূলত শ্রমিকদের পোশাক হিসেবেই তৈরি হয়েছিল। প্রথমদিকে এই প্যান্টের মডেলটিকে “XX” নামে ডাকা হতো, যা পরবর্তীতে দুনিয়া কাঁপানো “Levi’s 501” মডেলে পরিণত হয়।

কেন জিন্সের রঙ নীল? এক প্রাকৃতিক রহস্য

প্রথমদিকের জিন্সগুলো কিন্তু সবসময় নীল ছিল না। ক্যানভাস কাপড়ের বাদামী রঙের প্যান্টও তৈরি হতো। কিন্তু খুব দ্রুতই নীল রঙটি জিন্সের সমার্থক হয়ে ওঠে। এর কারণ হলো ইন্ডিগো বা নীল গাছের রঙ।

কারখানায় জিন্স ড্রাই করা হচ্ছে

ইন্ডিগো ডাই ছিল সহজলভ্য এবং সস্তা। কিন্তু এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ছিল এর রঙ করার পদ্ধতিতে। অন্যান্য রঙ কাপড়ের সুতোর গভীরে প্রবেশ করে, কিন্তু ইন্ডিগো ডাই সুতোর বাইরের অংশে আঠার মতো লেগে থাকে। এর ফলে, বারবার ধোয়ার পর বা ব্যবহারের ফলে জিন্সের রঙ ধীরে ধীরে হালকা হতে শুরু করে এবং একটি ফ্যাঁকাসে ভাব চলে আসে। প্রতিটি মানুষের শরীরের গঠন এবং ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী জিন্সের রঙ ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে হালকা হয়, যা প্যান্টটিকে একটি ব্যক্তিগত এবং ব্যবহৃত রূপ দেয়। জিন্সের এই ‘ফেড’ হওয়ার বৈশিষ্ট্যটিই পরবর্তীকালে এর ফ্যাশন আইকন হয়ে ওঠার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়, কারণ এটি প্রত্যেকটি জিন্সকে একে অপরের থেকে আলাদা করে তোলে।

শ্রমিকের পোশাক থেকে তরুণদের বিদ্রোহের প্রতীক

প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে জিন্স ছিল শুধুমাত্র শ্রমিক, কৃষক এবং কাউবয়দের পোশাক। এটি ছিল কঠোর পরিশ্রম এবং মজবুত গঠনের প্রতীক। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এসে এই ধারণা পুরোপুরি বদলে যায়।

  • হলিউড ও কাউবয় সংস্কৃতি: ১৯৩০ থেকে ১৯৫০-এর দশকে হলিউডের ওয়েস্টার্ন সিনেমাগুলো কাউবয়দের এক রোমান্টিক এবং দুঃসাহসী নায়ক হিসেবে তুলে ধরে। জন ওয়েনের মতো অভিনেতারা যখন পর্দায় জিন্স পরে আসতেন, তখন তা আর শুধু শ্রমিকের পোশাক থাকল না, হয়ে উঠলো পৌরুষ এবং স্বাধীনতার প্রতীক।
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও বিশ্বায়ন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকান সৈন্যরা (G.I.s) যখন ডিউটির বাইরে থাকত, তখন তারা জিন্স পরত। যুদ্ধের সূত্রে তারা যখন ইউরোপ ও জাপানে গিয়েছিল, তখন তাদের মাধ্যমে জিন্স প্রথমবারের মতো বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করে। এটি জিন্সের বিশ্বায়নের প্রথম ধাপ ছিল।
  • বিদ্রোহের প্রতীক: জিন্সের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে ১৯৫০-এর দশকে। এই সময়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এক ধরনের প্রতিষ্ঠান-বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়। মার্লোন ব্র্যান্ডো ‘দ্য ওয়াইল্ড ওয়ান’ (১৯৫৩) এবং জেমস ডিন ‘রেবেল উইদাউট এ কজ’ (১৯৫৫) সিনেমায় জিন্স পরে পর্দায় আসেন। তাদের চরিত্রগুলো ছিল বিদ্রোহী, প্রচলিত সমাজের নিয়ম না মানা তরুণ। রাতারাতি জিন্স হয়ে ওঠে তরুণদের বিদ্রোহের ইউনিফর্ম। অনেক স্কুল-কলেজ জিন্স পরা নিষিদ্ধ করে দেয়, যা তরুণদের কাছে একে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। জিন্স পরা হয়ে ওঠে বাবা-মায়ের প্রজন্মের ফরমাল পোশাকের বিরুদ্ধে এক নীরব প্রতিবাদ।
হিপ্পি আন্দোলনে জিন্স পরে নারীর বিদ্রোহ
  • নারীমুক্তি ও জিন্স: একই সময়ে জিন্স নারীমুক্তিরও একটি প্রতীক হয়ে ওঠে। নারীরা যখন জিন্স পরতে শুরু করে, তখন এটি ছিল প্রচলিত নারীসুলভ পোশাক (স্কার্ট, ড্রেস) থেকে বেরিয়ে এসে স্বাধীনতা এবং সমতার এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।
  • হিপ্পি সংস্কৃতি: ১৯৬০ এবং ৭০-এর দশকে আমেরিকার হিপ্পি আন্দোলন জিন্সকে তাদের প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে। তারা তাদের জিন্সে ফুল, লতাপাতার এমব্রয়ডারি করত, বিভিন্ন প্যাচ লাগাত এবং নিজেদের হাতে জিন্সকে নতুন রূপ দিত। প্রশস্ত পায়ের ‘বেল-বটম’ জিন্স এই সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্যাশন হয়ে ওঠে। জিন্স তখন ছিল শান্তি, ভালোবাসা এবং যুদ্ধবিরোধী চেতনার প্রতীক।

ফ্যাশনের মূলধারায় জিন্স: ডিজাইনার থেকে বিশ্বজুড়ে

যে জিন্স ছিল একসময় খনিশ্রমিকদের পোশাক, ১৯৭০ এবং ৮০-এর দশকে এসে তা হাই ফ্যাশনের জগতে প্রবেশ করে। ডিজাইনাররা জিন্সকে নতুন করে দেখতে শুরু করেন।

এই পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় মুহূর্তটি আসে ১৯৮০ সালে, যখন ডিজাইনার ক্যালভিন ক্লেইন তার জিন্সের জন্য একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করেন। সেই বিজ্ঞাপনে ১৫ বছর বয়সী মডেল ব্রুক শিল্ডস বলেন, “You want to know what comes between me and my Calvins? Nothing.” (জানতে চাও আমার আর আমার ক্যালভিনসের মাঝে কী আছে? কিছুই না)। এই বিজ্ঞাপনটি একদিকে যেমন বিতর্ক তৈরি করে, তেমনই জিন্সকে এক রাতের মধ্যে হাই ফ্যাশনের কাতারে নিয়ে আসে। গ্লোরিয়া ভ্যান্ডারবিল্ট এবং জর্জিও আরমানির মতো ডিজাইনাররাও জিন্সকে তাদের কালেকশনে জায়গা দেন, যা একে এক নতুন স্ট্যাটাস সিম্বলে পরিণত করে।

এরপর থেকেই জিন্স নিয়ে শুরু হয় নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ‘স্কিনি জিন্স’, ‘বুটকাট’, ‘অ্যাসিড ওয়াশ’, ‘স্টোন ওয়াশ’ এবং পরে ‘ডিসট্রেসড’ বা ছেঁড়া জিন্সের মতো বিভিন্ন ট্রেন্ড আসতে থাকে। জিন্স আর শুধু আমেরিকার পোশাক থাকল না। এটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল। সোভিয়েত ইউনিয়নের তরুণদের কাছে আমেরিকান জিন্স ছিল পশ্চিমা সংস্কৃতির স্বাধীনতার প্রতীক। একইভাবে, এশিয়া এবং আফ্রিকার তরুণরাও জিন্সকে আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করে।

বড় শো রুমে জিন্সের সেকশন

জিন্স এটি এমন একটি পোশাক, যা কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণি, বয়স বা লিঙ্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। খনিশ্রমিক থেকে শুরু করে সিনেমার তারকা, রকস্টার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি সবাই জিন্সকে আপন করে নিয়েছে।

জিন্সের গল্প এখনও শেষ হয়নি। আজ টেকসই ফ্যাশনের যুগে, পানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব ডেনিম তৈরির নতুন নতুন উদ্ভাবন হচ্ছে। এই বিবর্তনই প্রমাণ করে, জিন্স শুধু একটি পোশাক নয়, এটি সময়ের সাথে সাথে বদলে যাওয়া মানব সমাজের এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তাই পরেরবার যখন আপনি আপনার প্রিয় জিন্সটি পরবেন, তখন শুধু একটি পোশাক পরবেন না, আপনি পরবেন ইতিহাসের এক জীবন্ত অংশকে।

তথ্যসূত্র –

Related posts

জনপ্রিয় ফাস্ট ফুড- বার্গার এর ইতিহাস

“ডেটিং অ্যাপ: ভালবাসার ডিজিটাল ঠিকানা”

ব্রেসিয়ারের ইতিহাস – নারীর সৌন্দর্য ও আত্মবিশ্বাসের চিরকালীন সঙ্গী

আবু সালেহ পিয়ার

Leave a Comment

Table of Contents

    This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More