মেয়েরা মনে করে তাদের কিছু স্বভাব পুরুষের কাছে তাদেরকে আকর্ষণীয় করে তুলবে, কিন্তু হিতে বিপরীত ঘটে। স্বভাবগুলো পুরুষদের কাছে একেবারেই অপছন্দ কিংবা বিরক্তিকর।
একজন নারী যত সুন্দরী হোক না কেন তার হয়তো এমন কিছু অভ্যাস রয়েছে যা তাকে সকলের চোখে অনাকর্ষণীয় করে তোলে। আকর্ষণ আসে হৃদয়, আচরণ এবং মন থেকে। শুধু সাজসজ্জা বা বাহ্যিক সৌন্দর্য দিয়ে কেউ বেশিক্ষণ আকর্ষণ ধরে রাখতে পারে না। মানুষ যেটা মনে রাখে, তা হলো তার ব্যবহার, আচরণ, এবং আন্তরিকতা।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন বিষয়গুলো একজন নারীকে অনাকর্ষণীয় করে তোলে-
নেতিবাচক মনোভাব
সবকিছুতেই অভিযোগ, দোষ খোঁজা, বা হতাশাজনক কথাবার্তা এমন মনোভাব অন্যদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং অন্যদের কাছ থেকে তাঁকে দূরে সরিয়ে দেয়।
অতিরিক্ত আত্মকেন্দ্রিকতা
সবসময় নিজেকে নিয়ে ভাবা, নিজেকে কেন্দ্র করে কথা বলা এবং অন্যদের অনুভূতি না বোঝা- এমন ধরনের আচরণ সকলের কাছেই বিরক্তির কারণ হয়ে উঠে।
অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস
অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কখনো কখনো অহংকারে রূপ নেয়, তাই এটি অনেকের কাছে চরম অপছন্দের কারণ হয়ে উঠতে পারে। অহংকারী নারী অন্যকে হেয় করতে দ্বিধা করে না। সৌজন্যবোধ ও নম্রতা আকর্ষণ তৈরি করে, কিন্তু রূঢ় ও অন্যকে ছোট করে কথা বলার অভ্যাস মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়।
কৃত্রিমতা
অতিনাটকীয় আচরণ, নিজের পরিচয় গোপন করে অন্য রূপে নিজেকে তুলে ধরা—এসব কৃত্রিমতা আকর্ষণ নষ্ট করে দেয়।
দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও নির্ভরশীলতা
নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে না পারা, সবসময় অন্যের উপর নির্ভর করা কিংবা দায়িত্ব এড়ানো কাউকে বিশ্বাসযোগ্য করে না—বরং একে দুর্বলতা হিসেবে দেখা হয়।
নারীর কোন আচরণ পুরুষদের কাছে অপছন্দের এবং বিরক্তিকর
মেয়েরা মনে করে তাদের কিছু স্বভাব পুরুষের কাছে তাদেরকে আকর্ষণীয় করে তুলবে, কিন্তু হিতে বিপরীত ঘটে। স্বভাবগুলো পুরুষদের কাছে একেবারেই অপছন্দ কিংবা বিরক্তিকর।
এই স্বভাবগুলোর কারণে ফাটল ধরতে পারে সম্পর্কেও। জেনে নিন নারীর এমন স্বভাব সম্পর্কে যা পুরুষেরা পছন্দ করেন না-
পরিবারকে অসম্মান
পুরুষের অপছন্দের তালিকার শীর্ষে আছে এই ব্যাপারটি। অনেক মেয়েই স্বামীর কারণে নিজের পরিবারকে অবহেলা করতে পারলেও পুরুষেরা কিন্তু এটা কোনভাবেই পারেন না। নিজের পরিবারকে অসম্মান ও অপছন্দ করা সব পুরুষদেরই খুব অপছন্দ। প্রেমিকা বা স্ত্রীর কাছ হতে এমন আচরণ মোটেও আশা করেন না তারা।
অন্য নারী
কিছু নারী আছেন যারা অন্য কোনো নারীকে যেন সহ্যই করতে পারেন না। স্বামীর কলিগ, কাজিন, বান্ধবী ইত্যাদি কাউকেই তাঁদের পছন্দ হয় না। এমনকি অচেনা নারীদের নিয়েও সন্দেহ করে থাকেন। এই একটি আচরণও পুরুষের অপছন্দের তালিকার শীর্ষে।
নিজের জীবন না থাকা
প্রেম-ভালোবাসা অবশ্যই জীবনের অংশ, কিন্তু পুরুষেরা নিজের মত সময় কাটাতেও খুব ভালোবাসেন। যে প্রেমিকা বা স্ত্রীর নিজের কোন জীবন নেই, সারাক্ষণ প্রেমিক বা স্বামীর জীবনে নাক গলাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি চরম বিরক্ত বোধ করেন পুরুষেরা। অপরদিকে আবার যে নারীর জীবনের কোনো লক্ষ্য নেই, কোন কাজ গুছিয়ে করতে আগ্রহী নন, এমন নারীকে কোন পুরুষই পছন্দ করেন না।
বন্ধুদের অপছন্দ করা
অসংখ্য নারী প্রেমিক বা স্বামীর বন্ধুদেরকে মোটেও পছন্দ করেন না, তাঁদের সাথে মেলামেশায় পদে পদে বাঁধা দিয়ে থাকেন। সব পুরুষের কাছে নারীর এই স্বভাব ভয়ানক অপছন্দ। বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক পুরুষ নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপার মনে করে থাকেন এবং এতে কারো নাক গলানো মোটেও মেনে নিতে পারেন না।
গসিপ
সারাক্ষণ অন্যের নামে কুৎসা রটানোর স্বভাবে পুরুষেরা অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে থাকেন। এমন নারীদেরকে ঝগড়াটে ও নিচু মনের অধিকারী মনে করে থাকেন।
মেয়েদের যেসব ভুল সম্পর্ক নষ্ট করে
সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য দুই সঙ্গীকেই সমান চেষ্টা করতে হয়। কারণ এক পক্ষের ছোট ভুলেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে পারে সম্পর্ক। এক্ষেত্রে কখনও পুরুষদের ভুল থাকে, আবার কোনও সময় নারীরও ভুল থাকে।
- প্রতি কাজের জন্য প্রেমিক বা স্বামীকে প্রশ্ন করা, আর তাকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা। তার নিশ্চয়ই এক সম্পর্কে থাকতে দমবন্ধ লাগে। তিনি মনে মনে খুবই কষ্ট পান। এই কষ্টই কিন্তু দুজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে। জবাবদিহি করতে করতে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েন। এক সময়ে এতটাই দূরত্ব বাড়ে যে, একে অপরের কাছাকাছিও আসতে পারেন না দুজন।
- সন্দেহবাতিক প্রেমিকা একদমই পছন্দ করেন না পুরুষরা। কারণ এমন কাজ সম্পর্ককে একটু একটু করে শেষ করে দিচ্ছে। তবে প্রেমিকার মনে কোনও বিষয় নিয়ে যদি নিরাপত্তাহীনতা থাকে, তাহলে সেটা নিয়ে সঙ্গীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করা যেতে পারে।
- সঙ্গীকে সময় না দেওয়া। কারণ প্রেমকে উজ্জীবিত রাখার জন্য দুজন সঙ্গীকেই সময় দিতে হবে। না হলে তো সম্পর্ক খারাপ হতে বিশেষ সময় লাগবে না! সারা দিন কাজের চাপে তেমন সময় না পেলেও সন্ধ্যায় সঙ্গীর খবর নিয়ে দিনটি কেমন কাটল জানতে চাইলেই তিনি খুশি হবেন।
একজন নারীকে অনাকর্ষণীয় মনে হওয়ার ৫টি কারণ
১। অতিরিক্ত রূপ সচেতন: পুরুষের কাছে বাহ্যিক সৌন্দর্য গুরুত্বপূর্ণ, তাতে সন্দেহ নেই। তবে সেটাই সবকিছু নয়। তাই নারী হিসেবে শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যই আপনার গুরুত্বের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত নয়।
২। ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকা: পুরুষের আকর্ষণ অর্জন করার পদ্ধতি যদি তার হাতে ধরা না দেওয়ার চেষ্টা হয়, তবে যে পুরুষ তাতে আকৃষ্ট হবে সে ওই নারীর জীবনের জন্যই ক্ষতিকর হবে। তাই নারী হিসেবে নিজেকে আবদ্ধ না রেখে পুরুষদের আপনার সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ নেওয়া উচিত।
৩। অনেক পুরুষ আপনার প্রতি আগ্রহী এমনটা বোঝোনো: প্রতিযোগিতা পুরুষকে বাড়তি পরিশ্রমে আগ্রহী করে তোলে। কোনো পুরুষকে যদি বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে, সেই নারীর জন্য আরও অনেকেই ঘুরছে তবে একপর্যায়ে তার আত্মসম্মানে আঘাত আসবে। নিজের আত্মসম্মান বাঁচাতে নিজেই প্রতিযোগিতা থেকে সরে যাবে।
৪। সাহায্য চাই সবসময়: সবসময় সাহায্য চাওয়া ঠিক নয়। নারী হিসেবে নিজেকে বারবার অসহায়ভাবে উপস্থাপন করলে তা সম্পর্ক নষ্টের কারণ হতে পারে। পুরুষেরা সঙ্গীর পাশে থাকতে চায় ঠিকই, কিন্তু সবসময় দায়িত্বের ভার নিতে গেলে তা একসময় ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে। তাই পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে সাহায্য চাওয়া উচিত।
৫। তার পছন্দকে নিজের পছন্দ বানানো: ভালোবাসা মানে শুধু সঙ্গীর ভালো দিক নয়, মন্দ দিকও গ্রহণ করা। সবারই ইচ্ছে থাকে কেউ একজন তাকে তার নিজস্বতায় ভালোবাসুক। ভালোবাসার মানুষটির আগ্রহে অংশ নেওয়া ভালো, তবে নিজের আগ্রহ বিবেচনা করাও জরুরি। জোর করে সবকিছু ভালো লাগার ভান করলে নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে যাবে, যা সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর।