২০২৫ সালের স্মার্টফোন যুদ্ধ—আইফোনের প্রিমিয়াম ইকোসিস্টেম, পিক্সেলের একচেটিয়া এআই ম্যাজিক, নাকি স্যামসাংয়ের ফিচার-ভরপুর পাওয়ারহাউস?কে হলো পারফরম্যান্স, ক্যামেরা আর ইনোভেশনের রাজা? দেখে নিন কোন ফোন বাজিমাত করল এবারের মোবাইল মঞ্চে!
২০২৫ সালে স্মার্টফোনের জগতে এসেছে অসাধারণ প্রযুক্তি, ডিজাইন এবং পারফরম্যান্সের দিক থেকে নতুন মডেলগুলো নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এই বছরটি স্মার্টফোন প্রেমীদের জন্য সত্যিই স্পেশাল। কারণ বাজারে হাজির হয়েছে কয়েকটি লিজেন্ডারি ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই বছরটির সেরা স্মার্টফোন কোনটি? কোন ডিভাইসটি আপনার দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য সর্বোত্তম হবে এবং কোনটা দেবে অসাধারণ ইউজার এক্সপেরিয়েন্স? আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব ২০২৫ সালের সেরা স্মার্টফোনগুলো নিয়ে, যা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।
আইফোন না অ্যান্ড্রয়েড কোনটা নেবো
অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোনের তুলনা করার সময় ডিভাইস, সফটওয়্যার, নিরাপত্তা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো বুঝে নেওয়া দরকার। যদি আমরা প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করি, তবে কোনটি সেরা তা নির্ধারণ সহজ হয়। অধিকাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরই ইতোমধ্যে কোনো একটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে প্রাথমিক ধারণা থাকে।
আইফোনের মডেল সংখ্যা অ্যান্ড্রয়েডের তুলনায় কম হলেও, ব্যবহারকারীরা ক্রমশ নতুন ও উন্নত মডেল বেছে নিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, iPhone SE হলো সবচেয়ে সস্তা আইফোন, যা পুরানো ডিজাইন ও হোম বাটনসহ আসে। তবে এতে সিঙ্গেল লেন্স ক্যামেরা থাকায় iPhone 12 এর মতো উন্নত ছবি আশা করা যায় না। iPhone SE মূলত বাজেট সচেতন ও পুরনো ডিজাইন পছন্দকারীদের জন্য উপযুক্ত।
অন্যদিকে, iPhone 12-এ OLED স্ক্রিন ও ৫জি প্রযুক্তি রয়েছে।এটি শার্পার কালার এবং দ্রুত ইন্টারনেটের সুবিধা দেয়। যদিও এখনো অনেক দেশে ৫জি পুরোপুরি চালু হয়নি, ভবিষ্যতে এটি বিস্তৃত হবে।
অ্যাপল মডেল সংখ্যা কম হলেও, অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে Samsung, Google Pixel, OnePlus, Motorola, Nokia সহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অসংখ্য বিকল্প পাওয়া যায়। ফলে দামেরও বিস্তর পার্থক্য দেখা যায়।
উদাহরণস্বরূপ, Samsung S20 FE 5G iPhone SE-এর ভালো বিকল্প, যেখানে শক্তিশালী ক্যামেরা, OLED ডিসপ্লে এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি ডিজাইন রয়েছে। Samsung S20 Ultra 5G আইফোন 12 Pro-এর প্রতিদ্বন্দ্বী, যেটিতে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি, ৪x পেরিস্কোপ জুম ক্যামেরা ও ১৬জিবি র্যাম দেওয়া হয়েছে।
দামের দিক থেকে, একই ক্যাটাগরির ফোন হলেও অ্যান্ড্রয়েড সাধারণত সস্তা হলেও, গড়ে দুই-তিন বছর ব্যবহারের পর নিরাপত্তা ও সফটওয়্যার আপডেটের বিষয়টিতে অনেক অ্যান্ড্রয়েড ফোন পিছিয়ে থাকে। অপরদিকে, অ্যাপল পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় পর্যন্ত নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এছাড়া, আইফোনে ব্যাটারি পরিবর্তনের সুবিধাও রয়েছে যা দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারকারীর জন্য সুবিধাজনক।
নরটন সহ বিভিন্ন সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞদের মতে, ম্যালওয়্যার আক্রমণ অ্যান্ড্রয়েডে iOS এর তুলনায় অনেক বেশি দেখা যায়।
অ্যাপল iPhone ব্যবহারকারীদের জন্য শুধুমাত্র তাদের অফিসিয়াল App Store থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করার অনুমতি দেয়, যার ফলে iOS অ্যাপগুলো নিরাপত্তার দিক থেকে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য। App Store এ কোনও ক্ষতিকর বা Malicious অ্যাপ কখনো অনুমোদিত হয় না।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা হলো iOS-এর “sandboxing” প্রযুক্তি, যা প্রতিটি অ্যাপকে আলাদা রাখে এবং অন্য অ্যাপের তথ্য অ্যাক্সেস করতে দেয় না। ফলে iOS ডিভাইসের নিরাপত্তা ও প্রাইভেসি অনেক বেশি শক্তিশালী থাকে।
অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম গুগলের মালিকানাধীন এবং গুগল তাদের প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। তবে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের নিজেদের সিকিউরিটি সচেতন থাকা জরুরি, কারণ অনেক সস্তা অ্যান্ড্রয়েড ফোন নিয়মিত সফটওয়্যার ও সিকিউরিটি আপডেট পায় না। তাই অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সর্বশেষ আপডেট থাকা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যাপের দিক থেকে iOS-এর App Store-এ প্রায় ১.৯৬ মিলিয়ন অ্যাপ আছে, যেখানে গুগল প্লে স্টোরে ২.৮৭ মিলিয়নের বেশি অ্যাপ পাওয়া যায়। যদিও অ্যান্ড্রয়েডে অ্যাপের সংখ্যা বেশি, তবে মান ও কার্যকারিতার দিক থেকে অ্যাপল স্টোরের অ্যাপগুলো অনেক বেশি উন্নত এবং বিশ্বাসযোগ্য।
অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন উৎস থেকে অ্যাপ ডাউনলোডের সুযোগ পায়, কিন্তু iOS-এ এটা সম্ভব নয়। এর ফলে iPhone ব্যবহারকারীরা এক ধরনের অতিরিক্ত সুরক্ষার সুবিধা পায়।
কাস্টমাইজেশনেও অ্যান্ড্রয়েড বেশ সুবিধাজনক। iOS ১৪ থেকে অ্যাপল ও Widget ফিচার চালু করেছে, যার ফলে iPhone ব্যবহারকারীরাও হোমস্ক্রিন সাজাতে পারেন। তবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে উইজেটের সংখ্যা ও কাস্টমাইজেশন বিকল্প অনেক বেশি এবং আপনি বিভিন্ন লঞ্চার ব্যবহার করে ফোনের পুরো ইন্টারফেস পরিবর্তন করতে পারেন।
অ্যাপল ডিভাইসগুলো নিজেদের ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে পারস্পরিক সংযোগ খুব মসৃণভাবে তৈরি করে, যেমন iPhone ও MacBook-এর মধ্যে Notes, কল, মেসেজ সিঙ্ক। অ্যান্ড্রয়েড ও Windows ১০-এর ইন্টিগ্রেশন থাকলেও তা তুলনামূলক কম সুনির্মিত।
সফটওয়্যার আপডেটের ক্ষেত্রে আইফোন অনেক এগিয়ে। পুরনো ডিভাইসেও তারা দীর্ঘদিন সফটওয়্যার সাপোর্ট দেয়, যা নিরাপত্তা ও পারফরম্যান্সের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অপরদিকে, অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলো সাধারণত দুই-তিন বছরের বেশি সফটওয়্যার আপডেট পায় না।
সেরা ক্যামেরা ফোন 2025
ছবি তোলা মানুষের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। আজকাল, ফোনের ক্যামেরার গুণাগুণই আমাদের স্মৃতি ধরে রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই ব্যবহারকারীদের জন্য সেরা ক্যামেরা ফোন নির্বাচন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ২০২৫ সালের সেরা ক্যামেরা ফোনগুলোর মধ্যে রয়েছে Samsung Galaxy S24 Ultra, iPhone 15 Pro Maxএবং Google Pixel 8 Pro।
Samsung Galaxy S24 Ultra একটি আধুনিক ডিভাইস যা তার ২০০ মেগাপিক্সেলের প্রধান সেন্সরের কারণে বিখ্যাত। এর ক্যামেরা সিস্টেমে ১০ গুণ অপটিক্যাল টেলিফটো লেন্স এবং লেজার ফোকাস প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত, যা এটিকে প্রফেশনাল গ্রেড ফটোগ্রাফির জন্য উপযুক্ত করে তোলে। এই ফোনটি ৮কে ভিডিও রেজুলিউশন সমর্থন করে এবং নাইটোগ্রাফির ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এছাড়া, উন্নত এআই প্রসেসিং সুবিধা থাকায় এটি ফটোগ্রাফার ও ভ্লগারদের জন্য একেবারে উপযুক্ত।
Apple-এর iPhone 15 Pro Max বিশেষভাবে তার রঙ ও ভিডিওর অদ্বিতীয় ক্যালিব্রেশনের জন্য পরিচিত। এতে ৪৮ মেগাপিক্সেলের মূল সেন্সর, ৫ গুণ টেলিফটো এবং LiDAR সেন্সর রয়েছে।এই সেন্সর গুলো অসাধারণ ছবি ও ভিডিও ধারণ নিশ্চিত করে।আবার, ProRes ভিডিও ও 4K Cinematic মোডের মতো ফিচার প্রফেশনাল কন্টেন্ট নির্মাতাদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
অন্যদিকে, Google Pixel 8 Pro তার উন্নত AI ক্যামেরা প্রসেসিংয়ের জন্য সুপরিচিত। এর ৫০ মেগাপিক্সেলের মেইন ক্যামেরা, ৪৮ মেগাপিক্সেলের আল্ট্রাওয়াইড এবং ৪৮ মেগাপিক্সেলের টেলিফটো ক্যামেরা সিস্টেম ‘নাইট সাইট’ প্রযুক্তির মাধ্যমে রাতের তোলা ছবিতে অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রদান করে। Magic Editor, মোশন ব্লার রিমুভারসহ বিভিন্ন AI টুলের মাধ্যমে এটি ন্যাচারাল ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে অন্যতম আধুনিক ফোন।
আইফোন বনাম স্যামসাং কোনটি ভালো ২০২৫
২০২৫ সাল—স্মার্টফোন দুনিয়ায় এক নতুন অধ্যায়। এই বছরে স্মার্টফোন প্রেমীদের নজর কাড়ছে দুই টেক জায়ান্ট কোম্পানি: Samsung এবং Apple। তারা হাজির হয়েছে তাদের নতুন ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস নিয়ে—Samsung Galaxy S25 Ultra এবং Apple iPhone 16 Pro Max। এই দুই ফোনকে ঘিরে ইতিমধ্যেই প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে তুমুল আলোচনা চলছে।
ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি: প্রথম দেখায় কী অনুভব করবেন?
Galaxy S25 Ultra: 218 গ্রাম, 162.8 x 77.6 x 8.2 mm
iPhone 16 Pro Max: 227 গ্রাম, 163.0 x 77.6 x 8.3 mm
দেখে বোঝা যায়, আকারে দুটো ফোনই প্রায় একরকম। যদিও iPhone সামান্য ভারী, তবে ব্যবহার করার সময় সেটা তেমন অনুভব করা যায় না।
Galaxy S25 Ultra-র ডিজাইন এ বছর কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। এর গঠন এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে ফোনটি হাতে আরও ভালোভাবে ধরা যায়—অর্থাৎ Ergonomic। অন্যদিকে iPhone 16 Pro Max এর কোণাগুলো রাউন্ড, যেটা অনেকেই আরও আরামদায়ক বলে মনে করবেন।
দুটি ফোনই তৈরি হয়েছে প্রিমিয়াম মেটেরিয়াল দিয়ে। IP68 রেটিং থাকার কারণে দুটোই পানি ও ধুলো প্রতিরোধে সক্ষম। তবে Apple বলছে তাদের ফোন ৬ মিটার পর্যন্ত পানির নিচে থাকলেও টিকে থাকতে পারে—এখানে তারা একটু এগিয়ে থাকবে।
ডিসপ্লে: কোন স্ক্রিনে আপনার চোখ বেশি স্বস্তি পাবে?
Galaxy S25 Ultra: 6.9″ LTPO OLED,120 Hz,1440x3120p, 498ppi, 1417 nits
iPhone 16 Pro Max: 6.9″ LTPO OLED,120 Hz,1320x2868p, 460ppi, 1796 nits
দুটোতেই রয়েছে বড় ৬.৯ ইঞ্চির ডিসপ্লে। Display Technology এর দিক থেকেও দুটো ফোনই LTPO OLED Panel ব্যবহার করে, যা অসাধারণ Color Accuracy এবং Viewing Angle প্রদান করে। LTPO OLED Display Battery সাশ্রয় করতেও সাহায্য করে।iPhone এর স্ক্রিন Galaxy-এর তুলনায় উজ্জ্বল হওয়ায় বাইরে আলোতে দেখা সহজ হয়। তবে Galaxy তে ব্যবহৃত অ্যান্টি-রিফ্লেক্টিভ গ্লাসের কারণে সেটাও দারুণ ভিজিবিলিটি দেয়।
এক্সট্রা হিসেবে Galaxy S25 Ultra তে S Pen এর সাপোর্ট রয়েছে। যারা লেখালিখি বা ডিজাইন করেন, তাদের জন্য এটি বিশাল সুবিধা।
Apple iPhone 16 Pro Max এ রয়েছে Dolby Vision Video সাপোর্ট, আর Samsung Galaxy S25 Ultra ব্যবহার করে HDR10+ প্রযুক্তি। এই দুটি ফরম্যাটই উন্নত মানের ভিডিও কনটেন্ট উপভোগের জন্য চমৎকার। Dolby Vision এবং HDR10+ – এই দুটি Technology Video এর Color এবং Contrast উন্নত করে, যা দেখার Experience কে আরও সুন্দর করে তোলে।
সিকিউরিটি ফিচার: ফেস আইডি না ফিঙ্গারপ্রিন্ট?
iPhone 16 Pro Max এখনো Face ID ব্যবস্থায় নির্ভরশীল। অন্যদিকে Galaxy S25 Ultra-তে রয়েছে স্ক্রিনের নিচে Ultrasonic Fingerprint Scanner। যা স্পর্শ করলেই দ্রুত ফোন আনলক করে—অনেকের কাছে এটা বেশি সুবিধাজনক।
ভিডিও ও কালার সাপোর্ট
Apple iPhone 16 Pro Max এ রয়েছে Dolby Vision Video সাপোর্ট, আর Samsung Galaxy S25 Ultra ব্যবহার করে HDR10+ প্রযুক্তি। এই দুটি ফরম্যাটই উন্নত মানের ভিডিও কনটেন্ট উপভোগের জন্য চমৎকার। Dolby Vision এবং HDR10+ – এই দুটি Technology Video এর Color এবং Contrast উন্নত করে, যা দেখার Experience কে আরও সুন্দর করে তোলে।
Battery Life ও Charging – কে কতক্ষণ সঙ্গ দেবে?
Samsung Galaxy S25 Ultra তে রয়েছে 5000 mAh ব্যাটারি, আর Apple iPhone 16 Pro Max এ রয়েছে 4685 mAh ব্যাটারি। চার্জিং স্পিডের কথা বললে, Samsung Galaxy S25 Ultra বেশ এগিয়ে। এটি মাত্র ১৫ মিনিটে ৪১% এবং ৩০ মিনিটে ৭২% পর্যন্ত চার্জ হয়ে যায়, আর সম্পূর্ণ চার্জ হতে সময় লাগে মাত্র ৫৯ মিনিট। অন্যদিকে, iPhone 16 Pro Max চার্জ হতে একটু বেশি সময় নেয়—১৫ মিনিটে ২৭%, ৩০ মিনিটে ৪৬%, আর ফুল চার্জ হতে সময় লাগে প্রায় ১১৭ মিনিট। তাই যাদের দ্রুত চার্জিং প্রয়োজন, তাদের জন্য Samsung Galaxy S25 Ultra নিঃসন্দেহে একটি ভালো পছন্দ।
উভয় ফোনেই রয়েছে Wireless Charging এর সুবিধা। তবে Apple iPhone 16 Pro Max এ আছে MagSafe প্রযুক্তি, যা ওয়্যারলেস চার্জিংকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করে তোলে। MagSafe চার্জারের মাধ্যমে iPhone সহজে এবং ঠিকমতো চার্জ হয়, যা ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করে।
কার সাউন্ডের প্রেমে পড়বেন?
একটি স্মার্টফোনে ভালো মানের স্পিকার থাকাটা বিনোদনের অভিজ্ঞতা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। ভালো স্পিকারের মাধ্যমে গান শোনা কিংবা ভিডিও দেখা আরও বেশি আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে। আপনি যদি সংগীতপ্রেমী হন, তাহলে স্পিকারের কোয়ালিটি আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
Samsung Galaxy S25 Ultra ও Apple iPhone 16 Pro Max – এই দুই ডিভাইসেই রয়েছে স্টেরিও স্পিকার, যার ফলে উভয় ফোনেই বেশ জোরালো ও স্পষ্ট শব্দ পাওয়া যায়। শব্দের উচ্চতা বা লাউডনেস প্রায় একই রকম হলেও, সাউন্ড কোয়ালিটির দিক দিয়ে iPhone 16 Pro Max কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে Bass এবং Treble এর মধ্যে ভারসাম্য iPhone-এ তুলনামূলকভাবে বেশি পরিণত। ফলে যদি আপনি উন্নতমানের অডিও অভিজ্ঞতা চান, তবে iPhone 16 Pro Max হতে পারে একটি দারুণ পছন্দ।
পারফরম্যান্স – আপনার স্মার্টফোন কতটা শক্তিশালী?
একটি স্মার্টফোনের পারফরম্যান্স তার ব্যবহারযোগ্যতার অন্যতম প্রধান দিক। যদি ফোনের পারফরম্যান্স দুর্বল হয়, তাহলে ব্যবহারকারী অভিজ্ঞতা ভালো হয় না। বিশেষ করে যদি আপনি গেম খেলতে ভালোবাসেন বা ভারী অ্যাপ্লিকেশন চালান, তাহলে পারফরম্যান্স আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Samsung Galaxy S25 Ultra তে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক Snapdragon 8 Elite চিপসেট, এবং Apple iPhone 16 Pro Max এ রয়েছে শক্তিশালী Apple A18 Pro চিপ। দুটোই 3nm প্রযুক্তিতে তৈরি এবং অত্যন্ত পারদর্শীভাবে স্মুথ পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম।
Samsung Galaxy S25 Ultra: Snapdragon 8 Elite, 3nm, 12GB RAM ও 256GB স্টোরেজ
Apple iPhone 16 Pro Max: Apple A18 Pro, 3nm, 8GB RAM ও 256GB স্টোরেজ
বেঞ্চমার্ক ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সিঙ্গল-কোর পারফরম্যান্সে iPhone 16 Pro Max কিছুটা এগিয়ে। তবে মাল্টি-কোর এবং 3DMark পারফরম্যান্সে Samsung Galaxy S25 Ultra এগিয়ে আছে। এর মানে হলো, গেমিং কিংবা মাল্টিটাস্কিং-এর ক্ষেত্রে Galaxy S25 Ultra একটি দারুণ চয়েস হতে পারে। যদি আপনি হাই গ্রাফিক্স গেম খেলেন বা হেভি অ্যাপ্লিকেশন চালান, তাহলে Galaxy S25 Ultra আপনার জন্য সেরা বিকল্প হতে পারে।
সফটওয়্যার সাপোর্টের দিক থেকেও Samsung এখন ৭ বছরের Android আপডেট দিচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে ফোন ব্যবহারের জন্য দারুণ সুবিধাজনক। Apple iPhone ও দীর্ঘ সময় ধরে iOS আপডেট সরবরাহ করে, তাই এই দিক থেকেও দুটি ফোনই নির্ভরযোগ্য।
আপনি যদি গেমার হন বা ভারী কাজ করেন, তাহলে Galaxy S25 Ultra আপনার জন্য উপযুক্ত। আর আপনি যদি চান সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের নিখুঁত সমন্বয়ে স্ন্যাপি ও স্থিতিশীল অভিজ্ঞতা, তবে iPhone 16 Pro Max অসাধারণ একটি চয়েস।
ছবি তোলার অভিজ্ঞতা কেমন হবে?
একটি স্মার্টফোনের ক্যামেরা যদি উন্নত না হয়, তাহলে জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো ঠিকভাবে ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। আপনি যদি ফটোগ্রাফি পছন্দ করেন, তাহলে আপনার জন্য ক্যামেরার মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Samsung Galaxy S25 Ultra এবং Apple iPhone 16 Pro Max – দুটি ডিভাইসেই রয়েছে চমৎকার ক্যামেরা সেটআপ।
Samsung-এর ফোনটিতে রয়েছে 200MP Main Sensor, সঙ্গে 5x এবং 3x Telephoto Lens, যা ক্যামেরা ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক বেশি Flexibility এনে দেয়। এর ফলে আপনি বিভিন্ন দূরত্ব থেকে দারুণ মানের ছবি তুলতে পারবেন।
অন্যদিকে, iPhone 16 Pro Max-এ আছে 48MP Main Camera। যদিও রেজোলিউশন কম, তবে Apple তাদের ক্যামেরার ইমেজ প্রসেসিং এবং কালার টিউনিংয়ের জন্য প্রসিদ্ধ।
তবে উচ্চ রেজোলিউশনের কারণে Samsung Galaxy S25 Ultra এর ছবিগুলো আরও বিস্তারিত এবং স্পষ্ট দেখায়।
Daylight ছবিতে, Galaxy S25 Ultra-এর ইমেজগুলো আরও Expressive ও Sharp, যেখানে Low Light ও Night Mode-এ Samsung কিছুটা এগিয়ে।ভিডিও কোয়ালিটির ক্ষেত্রে, iPhone 16 Pro Max এর ভিডিও Slightly Sharper, তবে Samsung Galaxy S25 Ultra খুব একটা পিছিয়ে নেই – উভয় ফোনেই রয়েছে 8K ভিডিও রেকর্ডিং সাপোর্ট।
আপনি যদি ফটোগ্রাফি বা মাল্টিপারপাস ক্যামেরা পারফরম্যান্স চান, তাহলে Galaxy S25 Ultra একটি Versatile পছন্দ। আর আপনি যদি Cinematic ভিডিও ও টোন-ব্যালেন্সড ফটো চান, iPhone 16 Pro Max আপনাকে হতাশ করবে না।
গুগল পিক্সেল কিনবো নাকি স্যামসাং
গ্যালাক্সি S25 তার স্যামসাং সফটওয়্যার, ক্যামেরা অভিজ্ঞতা এবং শক্তিশালী হার্ডওয়্যারের কারণে আলাদা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, পিক্সেল 9-এ রয়েছে গুগলের স্টক অ্যান্ড্রয়েড এবং অসাধারণ ক্যামেরা।
দুটি ফোনই তুলনামূলকভাবে কমপ্যাক্ট, তবে S25 আরও ছোট । এটি ছোট, সরু, পাতলা এবং পিক্সেল 9 এর তুলনায় প্রায় ৩০ গ্রাম হালকা। নির্মাণে উভয় ফোনের সামনে ও পিছনে রয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম ও Gorilla Glass Victus দিয়ে সুরক্ষিত ফ্ল্যাট গ্লাস । এছাড়া, উভয়েরই IP68 সার্টিফিকেশন রয়েছে।এটি ধুলো এবং পানিতে সুরক্ষা নিশ্চিত করে ।
S25-তে ৬.২ ইঞ্চির LTPO OLED ডিসপ্লে রয়েছে, যার রেজুলেশন ১০৮০p এবং রিফ্রেশ রেট ১২০ Hz। পিক্সেল ৯ এর স্ক্রিন একটু বড়, ৬.৩ ইঞ্চি, কিন্তু এতে LTPO প্রযুক্তি এতে নেই। এর মানে, ফোন যখন ব্যবহারহীন থাকে, S25 এর স্ক্রিন রিফ্রেশ রেট কমিয়ে সর্বনিম্ন ১ Hz পর্যন্ত নামাতে পারে, যেখানে পিক্সেল ৯ এর রিফ্রেশ রেট সর্বনিম্ন ৬০ Hz।
অন্যদিকে, পিক্সেল ৯ এর ডিসপ্লে অনেক বেশি উজ্জ্বল, যা ব্যবহারকারীদের জন্য একটি বাস্তবিক সুবিধা এনে দেয়। S25-এ প্রায় ১,৪০০ নিট উজ্জ্বলতা পরিমাপ করে দেখা গেছে, সেটি যথেষ্ট উজ্জ্বল মনে হলেও পিক্সেল ৯ সহজেই সেটিকে ছাপিয়ে যায়। এর উজ্জ্বলতা প্রায় ২,২০০ নিটের উপরে পৌঁছে। ফলে রোদে দাঁড়িয়ে থাকলেও পিক্সেল ৯-এর স্ক্রিন সহজেই দেখা যায়। যদিও পিক্সেল ৯-এর স্ক্রিনের আকার কিছুটা বড়, তবুও ব্যবহারিক দিক থেকে উভয় ফোনই প্রায় সমান তীক্ষ্ণতা, চমৎকার কন্ট্রাস্ট এবং HDR10 Plus ভিডিও সাপোর্ট দিয়ে ব্যবহারকারীদের প্রিমিয়াম ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
অডিওর ক্ষেত্রে, উভয় ফোনেই রয়েছে স্টেরিও স্পিকার, যা মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টে বাড়তি প্রাণ যোগ করে। তবে পারফরম্যান্সে কিছু পার্থক্য চোখে পড়ে পিক্সেলের স্পিকার ভলিউমে এগিয়ে এবং এর রেটিং “ভেরি গুড”, যা খোলামেলা জায়গায় বা স্পিকার মোডে উপভোগ্য। অন্যদিকে, S25-এ অডিও কোয়ালিটি একটু বেশি পরিশীলিত মনে হয়েছে, বিশেষ করে এর বেস অনেক গভীর ও ভারী। কি ধরনের বেস মিউজিক বা সিনেমার সময় বাড়তি ইমারশন দেয়।
নিরাপত্তা দিকেও দুটো ফোনই সমান শক্তিশালী—উভয়টিতেই রয়েছে আন্ডার-ডিসপ্লে আল্ট্রাসনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, যা দ্রুত ও নির্ভুলভাবে কাজ করে। স্টোরেজ অপশনেও উভয়ে ১২৮ ও ২৫৬ গিগাবাইট দেয়। তবে যারা আরও বেশি স্পেস চান তাদের জন্য S25-এ রয়েছে ৫১২ গিগাবাইটের একটি বাড়তি অপশন।
সফটওয়্যার দিক থেকে অবশ্য পার্থক্য বেশ পরিষ্কার। S25 চালায় স্যামসাংয়ের নিজস্ব One UI 7, যা অ্যান্ড্রয়েড ১৫ ভিত্তিক হলেও এতে রয়েছে অনেক কাস্টম ফিচার, যেমন Samsung Dex। অন্যদিকে, পিক্সেল ৯ চলে গুগলের ক্লিন ও স্টক অ্যান্ড্রয়েড ১৫-এ। এর সরলতা, দ্রুত আপডেট ও কম ব্লটওয়্যারের জন্য এটি অনেকেরই পছন্দের তালিকায় রয়েছে।
AI ফিচার দিক থেকেও আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা সমানে সমান। গুগল ও স্যামসাং উভয়েই তাদের স্মার্টফোনে স্মার্ট রিপ্লাই, লাইভ ট্রান্সক্রিপশন, ইমেজ এনহান্সমেন্ট এবং রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেশন-এর মতো ফিচার রেখেছে। যদিও কিছু এক্সক্লুসিভ সুবিধা রয়েছে—যেমন গুগলের পিক্সেল কল স্ক্রীন বা স্যামসাং-এর ইনটেলিজেন্ট গ্যালারি টুলস।
সবচেয়ে ভালো দিক হলো, সফটওয়্যার সাপোর্ট নিয়ে এখন আর দুশ্চিন্তার কিছু নেই। উভয় কোম্পানিই ৭ বছরের দীর্ঘ সফটওয়্যার আপডেটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা এই ফোনগুলোর দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার নিশ্চিতে এক বিশাল প্লাস পয়েন্ট।
চিপসেট পারফরম্যান্সে বড় পার্থক্য রয়েছে। গ্যালাক্সি S25-এ রয়েছে সম্ভবত এখনকার সবচেয়ে শক্তিশালী Snapdragon 8 Elite চিপের ওভারক্লকড Galaxy সংস্করণ। পিক্সেল ৯-এ গুগলের নিজস্ব Tensor G4 চিপ ব্যবহার করা হয়েছে। যা খুব একটা উচ্চ ক্ষমতার নয়। তাই পিক্সেল ৯-এর বেঞ্চমার্ক ফলাফল একটি উচ্চ-মধ্যম রেঞ্জের ফ্ল্যাগশিপের মত। তুলনায়, S25 বেঞ্চমার্কে প্রায় দ্বিগুণ স্কোর অর্জন করে।
যদি আপনি হেভি ইউজার বা গেমার হন, তাহলে এই পার্থক্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে সাধারণ কাজের জন্য উভয় ফোনই স্মুথ এবং দ্রুত কাজ করে।
ব্যাটারি বিষয়ে, পিক্সেল ৯ কিছুটা এগিয়ে আছে।এতে রয়েছে বড় ব্যাটারি, ৪,৭০০ mAh, যেখানে স্যামসাং S25-এ রয়েছে ৪,০০০ mAh ব্যাটারি। তবে বাস্তব ব্যবহারে সেই ব্যবধান ততটা চোখে পড়ে না। আমাদের ব্যাটারি টেস্টে দেখা গেছে, সক্রিয় ব্যবহারে উভয় ফোনই প্রায় সমান সময় পর্যন্ত চার্জ ধরে রাখতে সক্ষম।
চার্জিং স্পিডেও তেমন কোনো বড় পার্থক্য নেই। আধা ঘণ্টার চার্জে দুই ফোনই প্রায় সমান চার্জ নেয়, যদিও পুরোপুরি চার্জ হতে S25 এর গতি সামান্য দ্রুত। উভয় ফোনেই ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্ট থাকায় ব্যবহারকারীরা আরও সহজে চার্জ দিতে পারেন, বিশেষ করে যারা কেবলহীন অভিজ্ঞতা পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি বেশ সুবিধাজন।
তবে, ক্যামেরার দিক থেকে কিছু স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। S25-এ তিনটি লেন্স রয়েছে—প্রধান ক্যামেরা, ৩ গুণ অপটিক্যাল জুম ক্যামেরা, এবং আল্ট্রাওয়াইড ক্যামেরা—যা ফটোগ্রাফিতে বেশি ফ্লেক্সিবিলিটি দেয়। পিক্সেল ৯-এ যদিও ডেডিকেটেড টেলিফটো লেন্স নেই, কিন্তু এর মেইন ও আল্ট্রাওয়াইড ক্যামেরার পারফরম্যান্স যথেষ্ট শক্তিশালী।
বিশেষ করে মেইন ক্যামেরা নিয়ে তুলনায়, পিক্সেল ৯-এর ছবি বেশি উপভোগ করার মতো। একই পরিমাণ বিস্তারিত থাকা সত্ত্বেও, পিক্সেলের ছবিগুলো পরিষ্কার, কম আর্টিফিশিয়াল শার্পনেসযুক্ত, এবং স্বাভাবিক দেখায়। রাত বা কম আলোতে, ১ গুণ জুমে পিক্সেল আবারও এগিয়ে থাকে। এর ডায়নামিক রেঞ্জ বেশি, ফলে আলো ও ছায়ার ভারসাম্য অনেক ভালোভাবে ধরে রাখতে পারে।
যেহেতু পিক্সেল-এ টেলিফটো ক্যামেরা নেই, তাই দুই ফোনের ২ গুণ ডিজিটাল জুম তুলনায় S25 ভালো পারফর্ম করে। ৩ গুণ জুমে অবশ্য S25 স্পষ্ট বিজয়ী কারণ এটি ডেডিকেটেড ক্যামেরা ব্যবহার করে, যেখানে পিক্সেল মূল ক্যামেরার ক্রপ ব্যবহার করে।
অপ্রত্যাশিত হলেও, রাতের অন্ধকারে পিক্সেল ৯-এর ৩ গুণ ক্রপড জুম ছবি S25 থেকে ভালো। সম্ভবত পিক্সেলের বড় সেন্সর টেলিফটো ক্যামেরার ছোট সেন্সরের চেয়ে ভালো কাজ করে।
রাতের দৃশ্যে এই পার্থক্য আরও স্পষ্ট। পিক্সেল ৯ রাতের শটে বেশি শার্পনেস, ডিটেইলস এবং উন্নত ডায়নামিক রেঞ্জ প্রদান করে, যা রাতের পরিবেশে নিখুঁত মুহূর্তগুলো ধরে রাখতে সাহায্য করে।
সেলফি ক্যামেরার ক্ষেত্রে উভয় ফোনই ভালো, এবং দুটোতেই রয়েছে অটোফোকাস—যা অনেক স্মার্টফোনে এখনও অনুপস্থিত। S25 এর সেলফি তুলনামূলকভাবে বেশি শার্প এবং ডিটেইলসমৃদ্ধ, যেখানে পিক্সেল ৯-এর সেলফিগুলো রঙিন ও প্রাণবন্ত, যা অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারের জন্য পছন্দ করবেন।
ভিডিওতে এসেও উভয় ফোন বেশ শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। উভয়েই ৪কে ভিডিও রেকর্ড করতে পারে, তবে S25 অতিরিক্ত সুবিধা দেয়—এটি ৮কে ভিডিও রেকর্ডিং সাপোর্ট করে, যা ভবিষ্যতের ভিউয়িং বা ক্রপিং প্রয়োজনের জন্য একধাপ এগিয়ে। তবে ৪কে ভিডিওর মান বিচারে, পিক্সেলের ভিডিওগুলো একটু এগিয়ে—শার্পনেস, রঙের প্রাণবন্ততা, এক্সপোজার কন্ট্রোল ও ডায়নামিক রেঞ্জের ক্ষেত্রে এটি সামান্য উৎকৃষ্ট।
যদিও জুম করা ভিডিওতে স্যামসাং এগিয়ে থাকে, এবং এর আল্ট্রাওয়াইড ভিডিও ক্লিপগুলো বেশি প্রাকৃতিক দেখায়। পিক্সেলের ভিডিও মাঝে মাঝে কিছুটা ওভারপ্রসেসড বা কৃত্রিম মনে হতে পারে। কম আলোতে, S25-এর মেইন ক্যামেরা খানিকটা বেশি ডিটেইল ধরে রাখতে পারে। এটি রাতের ভিডিওগ্রাফিতে সহায়ক।
দুটো ফোনেই প্রিমিয়াম বিল্ড কোয়ালিটি, জল-ধুলো প্রতিরোধ, বিস্তৃত AI ফিচার, দীর্ঘ সফটওয়্যার সাপোর্ট এবং প্রায় সমান ব্যাটারি ও চার্জিং স্পিড রয়েছে।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, Galaxy S25 একটি হালকা ও কমপ্যাক্ট ফোন, যেখানে রয়েছে উন্নত LTPO ডিসপ্লে প্রযুক্তি, প্রিমিয়াম স্পিকার সাউন্ড, এবং শক্তিশালী পারফরম্যান্স।দ্বিগুণ গতির চিপসেট, আরও স্টোরেজ অপশন, এবং Samsung-এর নিজস্ব সফটওয়্যার ফিচার যেমন Dex ও টেলিফটো জুম সুবিধা, যা পেশাদার ও পাওয়ার ইউজারদের জন্য বাড়তি সুবিধা দেয়।
অন্যদিকে, Pixel 9 একটি বড় ও অনেক উজ্জ্বল ডিসপ্লে সরবরাহ করে, যেখানে গুগলের স্টক অ্যান্ড্রয়েড ইন্টারফেস ব্যবহারের অভিজ্ঞতা অনেকেই সেরা মনে করেন- স্মার্ট, দ্রুত, এবং মসৃণ। এর মেইন ক্যামেরা বিশেষ করে ফটোগ্রাফি ও ভিডিওতে অসাধারণ পারফর্ম করে, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এটি তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী।বিশেষত ইউরোপের বাজারে।
সবশেষে, দুটি ফোনই আলাদা দিক থেকে দুর্দান্ত।S25 যেখানে পারফরম্যান্স ও বৈশিষ্ট্যে পূর্ণ, Pixel 9 সেখানে ক্যামেরা, সফটওয়্যার ও ডিসপ্লে অভিজ্ঞতায় এগিয়ে। আপনার যদি দ্রুত পারফরম্যান্স, উন্নত জুম ও ফিচার সমৃদ্ধ সফটওয়্যার দরকার হয়, তবে S25 সেরা পছন্দ হতে পারে। আর যদি আপনি সহজ, প্রাণবন্ত ক্যামেরা অভিজ্ঞতা এবং কম দামে স্মার্টফোন চান, তাহলে Pixel 9-ই হতে পারে আপনার আদর্শ সঙ্গী।
বাংলাদেশে আইফোন বনাম স্যামসাং দাম
বাংলাদেশের বাজারে দাম একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। Samsung এবং iPhone-এর তুলনায় দেখা যায়, আইফোন সাধারণত একটু বেশি দামে বিক্রি হয়, কিন্তু তার রিসেল ভ্যালু অনেক ভালো থাকে।
উদাহরণস্বরূপ:
iPhone 16 Pro max: প্রায় ৳২,১৯,৯৯৯.০০
Galaxy S25 Ultra: প্রায় ৳২,২৩,৯৯৯ (Official), ৳১,১৬,৫০০(Unofficial)
তবে এক থেকে দুই বছরের ব্যবহারের পর আইফোনের বিক্রয়মূল্য প্রায় ৭০-৮০% পর্যন্ত থাকে, যেখানে স্যামসাং ফোনের ক্ষেত্রে এই হার কিছুটা কম, বিশেষ করে যদি আপনি আল্ট্রা মডেল ব্যবহার না করেন।
তাছাড়া, অ্যাপলের ইকোসিস্টেমের অন্যান্য ডিভাইস যেমন MacBook, iPad, AirPods এর সঙ্গে সহজ ও নির্বিঘ্ন ব্যবহারযোগ্যতার কারণে অনেকেই দীর্ঘমেয়াদে আইফোনকে পছন্দ করেন। অন্যদিকে, স্যামসাং ব্যবহারকারীরা Galaxy Buds, Galaxy Watch এবং Galaxy Tab সহ একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যান্ড্রয়েড ইকোসিস্টেম উপভোগ করতে পারেন।
উপসংহার
সব মিলিয়ে বলা যায়, আজকের দিনে আইফোন ও অ্যান্ড্রয়েড উভয় প্ল্যাটফর্মেই উন্নত হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সুবিধা পাওয়া যায়। যদিও অ্যান্ড্রয়েড মূলত গুগল ভিত্তিক এবং আইফোনের দাম তুলনামূলক বেশি, তবুও ফিচার, নিরাপত্তা, কাস্টমাইজেশন এবং ডিভাইসের মধ্যে সংযোগের ক্ষেত্রে আইফোন এখনও এগিয়ে।